যেসব কারণে সংসদ থেকে ছিটকে গেলেন মমতাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ (সিংগাইর, হরিরামপুর ও সদরের আংশিক) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়ে এবার সংসদে যেতে পারছেন না দেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম। এর আগে অবশ্য তিনি দুবার এ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে এবারের নির্বাচনে ভরাডুবির কারণে তাকে নিয়ে নানা মহলে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

এবারের নির্বাচনে আসনটিতে ৮৮ হাজার ৩০৯ ভোট পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ জাহিদ আহমেদ টুলু। আর আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে মমতাজ পেয়েছেন ৮২ হাজার ১৩৮ ভোট। অর্থাৎ মাত্র ছয় হাজার ১৭১ ভোটের ব্যবধানে তিনি পরাজিত হয়েছেন।

পরিবারকেন্দ্রিক রাজনীতি, তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন, কমিটি গঠনে স্বেচ্ছাচারিতা, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিনকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দেয়া মূলত মমতাজের এ পরাজয়ের পেছনে বেশ জোরালো ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

সেই সঙ্গে নিজেদের পারিবারিক দ্বন্দ্বও ভোটারদের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছেন অনেকে। তার প্রয়াত বাবা মধু বয়াতির প্রথম স্ত্রী ও তিন কন্যা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেয়াটা অনেকটাই নড়বড়ে করে দিয়েছে মমতাজকে।

আব্দুর রহমান নামে হরিরামপুর উপজেলার এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নের দলীয় অনেক নেতাকর্মীর বিরোধিতা, নিজের অহংকারবোধ, ভাষার মাধ্যমে মানুষকে অবজ্ঞা করায় জনপ্রিয়তা কমে গেছে মমতাজের।

আব্দুল মতিন নামে আরেকজন জানান, প্রবাসীদের রেমিট্যান্স নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যও তার হারের একটি কারণ হতে পারে।

হরিরামপুর উপজেলার ভোটার কাদের শিকদার জানান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির সাথে খারাপ ব্যবহার এবং অনেক নেতাকর্মীকে বাজে ভাষায় কথা বলায়, তারা মমতাজের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। এদের সবাই ভোটের মাধ্যমে জবাব দিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গণমাধ্যমকর্মী জানান, তার পিএস জুয়েলকে ফোনে কখনো পাওয়া যায় না। তিনি নির্বাচনের আগেও ফোন ধরেননি। তার পিছনে সাংবাদিকদের ঘুরতে হয়। তার কাছে সাধারণ মানুষদের কোনো মূল্যায়নই ছিলো না। যার জন্যই ভরাডুবি হয়েছে মমতাজের।

আলমগীর নামে সিংগাইর উপজেলার এক ভোটার জানান, টুলু যেখানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাঠে-ঘাটে সাধারণ মানুষের মাঝে মিশেছেন ও ভোট চেয়েছেন, সেখানে মমতাজ বেগম ভোটই চান নি। শুধু জনপ্রিয়তা আর নিজের নামকেই তিনি প্রাধান্য দিয়েছেন।