থাই বিমান হামলায় কাঁপল কম্বোডিয়া: ট্রাম্পের শান্তিচুক্তি ভেঙে ছত্রভঙ্গ

থাইল্যান্ডের বিমান হামলায় কম্বোডিয়া; ট্রাম্পের শান্তিচুক্তি ধ্বংসের মুখে
বিশ্ব ডেস্ক: থাইল্যান্ড আজ (৮ ডিসেম্বর) ভোররাতে কম্বোডিয়ার ভূখণ্ডে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে। রয়্যাল থাই এয়ার ফোর্সের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান চং আন মা পাস এলাকায় কম্বোডিয়ার সামরিক অস্ত্রভাণ্ডার, কমান্ড সেন্টার এবং গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ লাইনে একাধিক নির্ভুল আঘাত হানে।
এতে মাত্র দেড় মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত কুয়ালালামপুর শান্তিচুক্তি কার্যত ভেঙে পড়ার মুখে।
থাই সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল উথাই সিনসুক জানান, গতকাল সন্ধ্যা থেকে কম্বোডিয়ার সেনারা উবন রতচাথানি প্রদেশের আনুপং সেনাঘাঁটিতে মর্টার ও আর্টিলারি হামলা চালায়। এতে এক থাই সেনা নিহত এবং দুজন আহত হন। তিনি বলেন, “এটি ছিল সরাসরি আক্রমণ। আমরা শুধু প্রতিরক্ষামূলক ও সীমিত পাল্টা হামলা পরিচালনা করেছি।”
অন্যদিকে কম্বোডিয়া এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, “ভোর ৫টা ৪ মিনিটে থাইল্যান্ডই দুটি স্থানে আকস্মিক আক্রমণ শুরু করে। আন্তর্জাতিক আইন মেনে আমরা কোনো প্রতিশোধ নিইনি।” সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান সিনেট চেয়ারম্যান হুন সেন টেলিগ্রামে লেখেন, “থাইল্যান্ড ইচ্ছাকৃতভাবে শান্তি ভাঙতে চায়, যাতে ট্রাম্পের শান্তি উদ্যোগ ব্যর্থ হয়।”
পরিস্থিতি অবনতির পর থাই প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল সকালে জরুরি নিরাপত্তা বৈঠক ডেকেছেন। সিসাকেট ও সা কায়ো প্রদেশের সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এদিকে কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে আরএম-৭০ রকেট লঞ্চার সীমান্তমুখী করে মোতায়েনের খবর পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ঘটনা নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি। দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে কুয়ালালামপুরে ছবি তুলে গত অক্টোবরে তিনি এই চুক্তিকে নিজের “বড় কূটনৈতিক বিজয়” বলে ঘোষণা করেছিলেন।
আসিয়ানের কাছে কম্বোডিয়া জরুরি তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। দু’দেশের সীমান্তে উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, যেকোনো মুহূর্তে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
থাইল্যান্ডের বিমান হামলায় কোনো নতুন বড় যুদ্ধবিরতি হয়নি। কম্বোডিয়া থাইল্যান্ডের অভিযোগ অস্বীকার করছে এবং আসিয়ানের কাছে তদন্ত চেয়েছে।
থাই সেনা বলছে, হামলায় কম্বোডিয়ার সামরিক ঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কিন্তু কোনো বেসামরিক হতাহতের খবর নেই। পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত; সীমান্তে আরও সৈন্য মোতায়েন হচ্ছে। ট্রাম্প এখনো কোনো মন্তব্য করেননি।








