শ্রীলঙ্কায় বিপর্যয়: পাকিস্তানের ত্রাণ আটকে, ভারত দ্রুত সহায়তা পাঠালো

শ্রীলঙ্কার সাইক্লোন “ডিটওয়াহ”: ৩৩৪ প্রাণহানি, পাকিস্তানের ত্রাণ বিলম্ব ও ভারতের দ্রুত হস্তক্ষেপ।

টুইট প্রতিবেদন: সিরিলঙ্কার দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল ঘেঁষে ২৮ নভেম্বর আঘাত হানা ইতিহাসের ভয়াবহ সাইক্লোন “ডিটওয়াহ” দেশটিকে বিধ্বস্ত করেছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ৩৩৪ জন নিহত, ৪০০-এর বেশি নিখোঁজ এবং ৪৪,০০০ মানুষ বাস্তুহারা হয়েছে।

কৃষি, মৎস্যক্ষেত্র এবং অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। বিদ্যুৎ, পানি এবং টেলিকম সেবা প্রায় ৩০% এলাকা বন্ধ, রাস্তা-সেতু ধ্বংস।

শ্রিলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন এবং পুনর্নির্মাণ তহবিল গঠন করেছেন। জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (DMC) জানিয়েছে, এটি সর্বশেষ ২০ বছরে দেশটির সবচেয়ে খারাপ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে আরও দৃশ্যমান করেছে।

পাকিস্তান জরুরি ত্রাণ পাঠাতে প্রস্তুতি নিয়েছিল। ৪৫ সদস্যের USAR টিম এবং ১০০ টন ত্রাণ সরঞ্জাম C-130 বিমানে কলম্বো পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে ভারতীয় সরকারের আকাশসীমা বন্ধের কারণে বিমানবাহিনী বিলম্বিত হয়েছে, যা পাকিস্তানি মিডিয়ায় ‘মানবিক সহায়তায় রাজনৈতিক বাধা’ হিসেবে প্রচারিত হয়েছে। পাকিস্তান বলেছে, তারা বিকল্প সমুদ্রপথে ত্রাণ চালিয়ে যাবে।

অন্যদিকে, ভারত ‘অপারেশন সাগর বন্ধু’ নামে দ্রুত সহায়তা পাঠিয়েছে। ২৮-২৯ নভেম্বর C-130J এবং Il-76 বিমানে ২১ টন ত্রাণ, NDRF সদস্য ও সরঞ্জাম কলম্বো পৌঁছেছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর INS ভিক্রান্ত, INS উদয়গিরি এবং INS সুকান্যা ত্রাণ বিতরণে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। বিদেশি ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া ভারতের তৎপরতার প্রশংসা করেছে।

পাকিস্তান-ভারতের এ উত্তেজনা আঞ্চলিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে আরও জটিল করছে। মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, আকাশসীমা বন্ধ করা মানবিক সাহায্যে রাজনীতির মিশ্রণ প্রদর্শন করছে। সিরিলঙ্কা উভয় পক্ষের সাহায্য গ্রহণ করলেও বিলম্বিত ত্রাণে জীবনহানি ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে। নেপাল ২ লক্ষ ডলার জরুরি সহায়তা ঘোষণা করেছে।

সাইক্লোন “ডিটওয়াহ” শুধু প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়, এটি আঞ্চলিক কূটনৈতিক চাপ এবং মানবিক সংকটের সমন্বয় ঘটিয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও সহযোগিতা নীতিকে নতুনভাবে পরীক্ষা করছে।