লালমনিরহাটে নতুন চতুরবাড়ী বিজিবি ক্যাম্প

লালমনিরহাটে নতুন ‘চতুরবাড়ী বিওপি’ ক্যাম্প উদ্বোধন: সীমান্ত সুরক্ষায় শক্তিশালী পদক্ষেপ।
টুইট ডেস্ক: রংপুর অঞ্চলের সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) নতুন ‘চতুরবাড়ী বিওপি’ ক্যাম্প উদ্বোধন করেছে। এই ক্যাম্পটি তিস্তা ব্যাটালিয়ন-৬১ বিজিবির আওতাধীন জোংড়া ইউনিয়নে স্থাপন করা হয়েছে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজিবির উত্তর-পশ্চিম রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম নাছের, যিনি বলেন, “সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি, চোরাচালান রোধ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও সুদৃঢ় করতে নতুন চতুরবাড়ী ক্যাম্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সীমান্ত সুরক্ষায় স্থানীয় জনগণ, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন।” তিনি আরও জানান, ভুল তথ্য বা গুজবের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা জরুরি এবং তাৎক্ষণিকভাবে বিজিবিকে জানানো উচিত।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন (তিস্তা-২)। পাটগ্রাম উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নে ইতিমধ্যেই ‘ধবলগুড়ি’ ও ‘খারিজাজোংড়া’ নামে দুটি ক্যাম্প রয়েছে। এই দুই ক্যাম্পের মধ্যবর্তী দূরত্ব বেশি হওয়ায় সীমান্তে নজরদারিতে বিঘ্ন ঘটত। এর ফলে চোরাকারবারি, মাদক পাচার, নারী ও শিশু পাচার এবং অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টা বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন চতুরবাড়ী ক্যাম্প এই ফাঁক পূরণ করে সীমান্তে বিজিবির উপস্থিতি আরও শক্তিশালী করবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কর্নেল এস এম শফিকুর রহমান (সেক্টর কমান্ডার, রংপুর) এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মোহাম্মদ মুসাহিদ মাসুম (৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক)। এছাড়া বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি এবং স্থানীয় বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ফিতা কেটে ক্যাম্প উদ্বোধন করা হয় এবং জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে লালমনিরহাট সীমান্ত নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে “ভারতের ৬২ কিলোমিটার সীমান্ত দখল” শীর্ষক গুজব ছড়িয়ে পড়ে। বিজিবি এই তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা উল্লেখ করে জানিয়েছে যে, সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং নিরাপদ রয়েছে। নতুন চতুরবাড়ী ক্যাম্প এই ধরনের গুজব প্রতিরোধে এবং সীমান্তে সক্রিয় উপস্থিতি নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এছাড়া, সীমান্তে বিজিবির সাম্প্রতিক অভিযানে ভারত থেকে গরু ও গাঁজা জব্দ, পুশ-ইন প্রচেষ্টা রোধের ঘটনা ঘটেছে। উদাহরণস্বরূপ, বিজিবি একাধিক সীমান্ত পয়েন্টে সাম্প্রতিক সময়ে ৩৮ জনকে পুশ-ইন থেকে বিরত করেছে। নতুন ক্যাম্প চোরাচালান, মাদক এবং অন্যান্য অবৈধ কার্যকলাপ রোধে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই উদ্যোগকে সুনামের সঙ্গে গ্রহণ করা হচ্ছে। এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “নতুন চতুরবাড়ী বিওপি বিজিবির ‘বিশ্বাস ও নিরাপত্তার প্রতীক’ হিসেবে কাজ করবে এবং চোরাচালান, মাদক ও অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
নতুন ক্যাম্পের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে এবং দুই দেশের মধ্যে শান্তি বজায় রাখতে সহায়তা করবে। বিজিবি জানিয়েছে, স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় তারা আরও কার্যকরভাবে সীমান্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে।







