কার্যাদেশের পরও থেমে রাজশাহী জনস্বাস্থ্যের সব কাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : “সমগ্র দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প”-এর আওতায় রাজশাহীতে বরাদ্দ পাওয়া ১০টি গ্রুপের কাজের কার্যাদেশ দেওয়া হয় গত জুলাই মাসে।

কিন্তু ৫ মাস পার হলেও বরগুনার পটকাখালি এলাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কামাল এন্টারপ্রাইজ এখনো একটি কাজও শুরু করতে পারেনি। চলতি বছরের ডিসেম্বরেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকায় সময়মতো কাজ শেষ না হওয়ার শঙ্কা এখন প্রকট হয়ে উঠেছে।

তথ্য গোপন ও বিভ্রান্তির অভিযোগ

প্রকল্পের অগ্রগতি জানতে সাংবাদিকরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরে গেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাক্কলনিক (স্টিমেটর) সালমা খাতুন যথাযথ তথ্য না দিয়ে উল্টো ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তির চেষ্টা করেন—এমন অভিযোগ উঠেছে। এতে প্রশ্ন উঠছে— • কাজ শুরু না হওয়ার কারণ গোপন করা হচ্ছে কেন? • ঠিকাদারকে আড়াল করতে কেন এমন আচরণ?

স্টিমেটরের স্বামীর অস্বাভাবিক প্রভাব

অনুসন্ধানে জানা গেছে, দপ্তরের বিল পাস, স্টিমেট অনুমোদনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ রফাদফাই স্টিমেটর সালমা খাতুনের স্বামীর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। একজন বহিরাগত ব্যক্তির এমন প্রভাব বিস্তার দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝেও বিস্ময় ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

৯ মিনিট ৩ সেকেন্ডের একটি অডিও ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে সালমা খাতুনের স্বামীকে ঠিকাদারদের সঙ্গে রফাদফাসংক্রান্ত ইঙ্গিতপূর্ণ আলোচনায় লিপ্ত থাকতে শোনা যায়। তার বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলার বসড়ি এলাকায়।

নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে আগের অভিযোগও বহাল

দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ–এর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, রাতে অফিস করা, বিল আটকে রাখা, অফিসের ফাইল বাসায় নেওয়া—এমন একাধিক অভিযোগ আগেই স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এসব অনিয়মে স্টিমেটর সালমা খাতুনকেও সহযোগী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়।

তবুও এত অভিযোগের পরও কোনো তদন্ত, বদলি বা বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে প্রশ্ন উঠেছে— তাদের রক্ষা করছে কে? কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?

একাধিক সূত্র দাবি করছে— নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ নিয়মবিধি লঙ্ঘন করে নিজেই ঠিকাদারি ব্যবসাও পরিচালনা করেন।

দায়িত্বশীলদের বক্তব্য

দপ্তরে গিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদকে পাওয়া যায়নি। ফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, “প্রকৌশলী হারুনের বিষয়ে আমি লিখিতভাবে উপর মহলে জানিয়েছি। নতুন প্রধান প্রকৌশলী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন।”

চিফ ইঞ্জিনিয়ার কার্যালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “অভিযোগগুলো আমাদের নজরে এসেছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে। যাচাই–বাছাই শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

প্রধান প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।