তারেক রহমানের জন্মদিনে উপহার: নারী নিরাপত্তায় ৫ মাস্টারপ্ল্যান

নারী নিরাপত্তা নিশ্চিতে তারেক রহমানের পাঁচ অগ্রাধিকার: অনলাইন-অফলাইনে ভয়মুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন

টুইট ডেস্ক: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নারীদের অনলাইন ও অফলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাঁচটি জরুরি অগ্রাধিকারের রূপরেখা দিয়েছেন।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাতে তার ভেরিফায়েড এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট @trahmanbnp থেকে পোস্ট করা এক দীর্ঘ বার্তায় তিনি বলেন, ডিজিটাল যুগে নারীদের হয়রানি, ভয়ভীতি, বুলিং এবং সহিংসতা থেকে মুক্তি দিতে হবে। এটি না হলে বাংলাদেশের স্বপ্নের ভবিষ্যৎ অধরা থেকে যাবে।

তারেক রহমান তার স্ত্রী ও কন্যার সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে লেখেন, “আজকের দুনিয়া আমাদের মেয়ের জন্য আমাদের বেড়ে ওঠার সময়ের চেয়ে অনেক আলাদা। সুযোগ যেমন বেড়েছে, তেমনি হুমকিও বেড়েছে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, রাজনীতি, ধর্ম, জাতি বা লিঙ্গ যাই হোক না কেন—নারী নিরাপদ, সহায়তাপ্রাপ্ত ও ক্ষমতায়িত না হলে বাংলাদেশ কখনো অপ্রতিরোধ্য হবে না।

তারেক রহমানের প্রস্তাবিত পাঁচ জরুরি অগ্রাধিকার

১. জাতীয় অনলাইন নিরাপত্তা ব্যবস্থা (National Online Safety System) নারীদের জন্য সাইবার বুলিং, হুমকি, ইম্পারসনেশন বা লিকড তথ্যের বিরুদ্ধে দ্রুত রিপোর্ট করার সহজ উপায়। ২৪/৭ হটলাইন, অনলাইন পোর্টাল এবং প্রশিক্ষিত রেসপন্ডার টিম। বড় প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে পার্টনারশিপ করে বাংলা ভাষায় মডারেশন উন্নত করা এবং আপত্তিকর কনটেন্ট দ্রুত মুছে ফেলা।

২. জনজীবনে নারীদের জন্য সুরক্ষা প্রোটোকল (Protection Protocols for Women in Public Life) সাংবাদিক, অ্যাকটিভিস্ট, ছাত্রী বা কমিউনিটি লিডার হিসেবে নারীরা যাতে আক্রমণের শিকার না হন, তার জন্য জাতীয় গাইডলাইন। দ্রুত আইনি ও ডিজিটাল সহায়তা এবং গোপনীয় রিপোর্টিং চ্যানেল। কোনো নারীকে জনজীবনে অংশ নেওয়ার জন্য চুপ করিয়ে দেওয়া যাবে না।

৩. ডিজিটাল নিরাপত্তা শিক্ষা (Digital Safety Education) স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ওরিয়েন্টেশনের সময় বাধ্যতামূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ। শিক্ষকদের ‘সেফটি ফোকাল পয়েন্ট’ হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং বার্ষিক সচেতনতা ক্যাম্পেইন। যাতে তরুণরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ডিজিটাল দুনিয়ায় চলাফেরা করতে পারে।

৪. সহিংসতা ও হয়রানির বিরুদ্ধে কমিউনিটি পর্যায়ে শক্তিশালী সাড়া (Stronger Community-Level Response) কমিউনিটি হেল্প ডেস্ক, নিরাপদ পরিবহন রুট, রাস্তায় উন্নত আলো এবং ট্রমা-সেনসিটিভ রেসপন্ডার। যাতে দৈনন্দিন জীবন নারীদের জন্য নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য হয়।

৫. নারী নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণের জাতীয় উদ্যোগ (Nationwide Push for Women’s Leadership and Participation) নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ, মেন্টরিং নেটওয়ার্ক এবং স্কুল-অফিস-কর্মক্ষেত্রে চাইল্ডকেয়ার সুবিধা বাড়ানো। যাতে নারীরা পূর্ণমাত্রায় নেতৃত্ব দিতে, অর্জন করতে এবং অবদান রাখতে পারেন। “যখন নারী উঠবে, জাতি তাদের সঙ্গে উঠবে।”

তারেক রহমান শেষ করেন এই আহ্বান দিয়ে: “আসুন আমরা সবাই মিলে এমন এক বাংলাদেশ গড়ি—যেখানে আমাদের কন্যা, মা, বোন ও সহকর্মীরা নিরাপদে বাঁচতে, স্বপ্ন দেখতে এবং নেতৃত্ব দিতে পারেন। আমাদের মেয়েদের জন্য, আগামী প্রজন্মের জন্য।”

বিএনপির এই প্রস্তাবকে অনেকে স্বাগত জানালেও কেউ কেউ বলছেন, এখন বাস্তবায়নের পালা। নারী নিরাপত্তা নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।