টেকনাফে বিজিবির অভিযানে ৮ রোহিঙ্গা জিম্মি উদ্ধার, পাচারকারী আটক

টেকনাফে বিজিবির অভিযানে ৮ রোহিঙ্গা জিম্মি উদ্ধার, ৪ নারী পাচারকারী আটক

কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং এলাকায় মানবপাচারকারী চক্রের হাত থেকে নারী ও শিশুসহ ৮ জন রোহিঙ্গাকে জিম্মি অবস্থায় উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। একই সঙ্গে চক্রের ৪ জন নারী সদস্যকে আটক করা হয়েছে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) গভীর রাতে সাবরাং ইউনিয়নের পানছড়ি এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে এ সাফল্য পাওয়া যায়।

টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান মঙ্গলবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবির একটি বিশেষ দল সাবরাংয়ের পানছড়ি এলাকায় মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মোতালেব ওরফে কালা বদরের বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখানে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা ৮ জন রোহিঙ্গাকে জিম্মি করে রেখেছিল। তাদের সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া পাচারের প্রস্তুতি চলছিল।

অভিযানের সময় বিজিবি সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে চক্রের প্রধানসহ অন্য সদস্যরা পালিয়ে যায়। তবে ঘটনাস্থল থেকে ৪ জন নারী পাচারকারীকে আটক করা সম্ভব হয়। আটককৃতরা হলেন—টেকনাফ সাবরাং এলাকার আসমা খাতুন (১৯), শাবনূর আক্তার (২০), জহুরা বেগম (৪৩) ও সাহারা খাতুন (৬২)।

উদ্ধার হওয়া ৮ জন ভুক্তভোগীই কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কার্ডধারী বাসিন্দা। তারা সবাই অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছেন। লে. কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, ভুক্তভোগীদের ঝুঁকিপূর্ণ ও জীবনসংহারী সমুদ্রযাত্রা থেকে তাৎক্ষণিকভাবে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে তাদের সংশ্লিষ্ট ক্যাম্প কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

আটক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। পলাতক আব্দুল মোতালেব ওরফে কালা বদরসহ অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে বিজিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বিজিবি অধিনায়ক আরও বলেন, ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি মানবপাচারসহ সব ধরনের অপরাধ দমনে সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা সবসময় বদ্ধপরিকর।’

উল্লেখ্য, টেকনাফ-উখিয়া এলাকায় রোহিঙ্গাদের মালয়েশিয়া পাচারের ঘটনা নতুন নয়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসেই একাধিকবার বিজিবি, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের যৌথ অভিযানে শতাধিক রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছে। পাচারকারী চক্রগুলো প্রলোভন দেখিয়ে বা জোরপূর্বক রোহিঙ্গাদের সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ায় পাচারের চেষ্টা করে আসছে। শীত মৌসুমে এ ধরনের ঘটনা সাধারণত বেড়ে যায়।

এই অভিযান বিজিবির সীমান্তে মানবপাচার প্রতিরোধে আরেকটি সফল পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।