মদিনার পথে নিশ্চিহ্ন এক পরিবারের তিন প্রজন্ম

সৌদি আরবে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা: একসঙ্গে শেষ হায়দরাবাদের এক পরিবারের তিন প্রজন্মের ১৮ জন
টুইট প্রতিবেদক: সৌদি আরবের মদিনা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪২ জনের মধ্যে ভারতের হায়দরাবাদের একই পরিবারের তিন প্রজন্মের ১৮ জন সদস্য রয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে ৯ জন শিশু এবং ৯ জন প্রাপ্তবয়স্ক। ওমরাহ পালন শেষে দেশে ফেরার পথে এই অকাল মৃত্যু হয় তাদের।
দুর্ঘটনায় নিহত পরিবারটি হায়দরাবাদের রামনগর এলাকার বাসিন্দা। তারা গত ৮ দিন আগে ওমরাহ করার উদ্দেশ্যে সৌদি আরব গিয়েছিলেন এবং আগামী শনিবার (২৩ নভেম্বর) দেশে ফেরার কথা ছিল।
নিহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম;
- নাসিরুদ্দিন (৭০)
- তাঁর স্ত্রী আখতার বেগম (৬০)
- ছেলে সালাউদ্দিন (৪২)
- মেয়ে আমিনা (৪৪), রিজওয়ানা (৩৮), শাবানা (৪০)
- তাঁদের সন্তান ও নাতি-নাতনিরা (মোট ৯ শিশুসহ)
নিহতদের আত্মীয় মোহাম্মদ আসিফ এনডিটিভিকে জানান, “আমার শ্যালক-শ্যালিকা, তাদের ছেলে-মেয়ে এবং নাতি-নাতনিরা মিলে পুরো ১৮ জন ওমরাহ করতে গিয়েছিলেন। ওমরাহ শেষে মদিনায় ফেরার পথে দুর্ঘটনাটি ঘটে। বেলা দেড়টার দিকে বাসটি একটি ডিজেল ট্যাংকারের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা খায় এবং মুহূর্তের মধ্যে আগুন ধরে যায়। বাসের অধিকাংশ যাত্রী তখন ঘুমে ছিলেন। আগুনের লেলিহান শিখায় কেউ বের হতে পারেননি।”
তিনি আরও বলেন, “একটি পরিবারের গোটা তিন প্রজন্ম—১৮ জন মানুষ একসঙ্গে চলে গেল। এর চেয়ে বড় ট্র্যাজেডি আমাদের জীবনে আর আসেনি।”
হায়দরাবাদের রামনগরে নাসিরুদ্দিনের বাড়িতে এখন শুধু কান্নার আওয়াজ। নিহত নাসিরুদ্দিনের বোন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমার ভাইয়ের পুরো পরিবারটা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। কিছুই আর বাকি রইল না।”
দুর্ঘটনায় নিহত ৪২ জনের অধিকাংশই হায়দরাবাদের বাসিন্দা ছিলেন। যে বাসটিতে তারা ছিলেন, সেটি মদিনা থেকে ফেরার পথে ডিজেল ট্যাংকারের সঙ্গে সংঘর্ষের পর পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি এবং সৌদি আরবে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস ও কনস্যুলেটের মাধ্যমে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
বর্তমানে মৃতদেহগুলো শনাক্তকরণ ও দেশে ফেরতের প্রক্রিয়া চলছে। হায়দরাবাদজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।






