বম জনগোষ্ঠীর সম্মেলনে সেনাবাহিনীর শান্তির বার্তা

বান্দরবানে বম জনগোষ্ঠীর খ্রিষ্টান চার্চের প্রথম বার্ষিক সম্মেলনে সেনাবাহিনীর শান্তি-সম্প্রীতির বার্তা

বান্দরবান প্রতিনিধি: পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যে সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ—তার উজ্জ্বল প্রমাণ মিলল আবারও। বান্দরবান সদর উপজেলার হেব্রন পাড়ায় বম জনগোষ্ঠীর ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান চার্চ (ইসিসি)-এর প্রথম বার্ষিক সম্মেলন ২০২৫-এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড ও বান্দরবান রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম রাকিব ইবনে রেজওয়ান।

তিনি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পাহাড়ি সকল জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা, অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় সেনাবাহিনীর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

১৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত এই ধর্মীয় ও সামাজিক সম্মেলনে ধর্মযাজক, কারবারী (গ্রাম প্রধান) এবং স্থানীয় বম জনগোষ্ঠীর শতাধিক মানুষ অংশ নেন।

সেনাবাহিনীর অবস্থান: শান্তি ও সম্প্রীতির পাশে সবসময়

বক্তব্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রাকিব ইবনে রেজওয়ান বলেন, “ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে শান্তি ও নিরাপত্তায় আমরা আছি আপনাদের পাশে।”

তিনি জানান, সদর দপ্তর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মীর মুশফিকুর রহমানের নির্দেশনায় পার্বত্য অঞ্চলে সব জাতি ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নিরাপত্তা এবং অধিকার সুরক্ষায় সেনাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি স্পষ্ট করে বলেন—সেনাবাহিনী কখনো কোনো ধর্মীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না; বরং শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় সকলে এক হয়ে কাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো গুজব-অপপ্রচার সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

মানবিক উদ্যোগ: পালিয়ে থাকা বম সম্প্রদায়ের পুনর্বাসন

রিজিয়ন কমান্ডার জানান, সেনাবাহিনীর মানবিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে মিজোরামে পালিয়ে থাকা বম সম্প্রদায়ের ৪৮১ জনকে নিরাপদে নিজ গ্রামে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তাদের পুনর্বাসনে আর্থিক সহায়তা, ঘর নির্মাণসহ বিভিন্ন সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

এই কার্যক্রম বম সহ পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থা আরও বাড়িয়েছে।

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া: সেনাবাহিনীই নিরাপত্তার প্রতীক

সম্মেলনে অংশ নেওয়া ধর্মযাজক, কারবারী ও বম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা বলেন, পাহাড়ে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি তাদের কাছে নিরাপত্তার প্রতীক। পালিয়ে থাকা বমদের ফিরিয়ে আনতে সেনাবাহিনীর উদ্যোগের প্রতি তারা কৃতজ্ঞতা জানান এবং ভবিষ্যতেও সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর মানবিক সহায়তা, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও সামাজিক উন্নয়নমূলক উদ্যোগ স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। এ ধরনের অনুষ্ঠান ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সম্প্রদায়িক ঐক্য আরও দৃঢ় করে।