রাজশাহীতে এবার সতন্ত্রের ৪ নারী সমর্থকসহ পাঁচজনকে পেটাল নৌকার কর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থীর চার নারী কর্মীসহ পাঁচজনকে পিটিয়ে জখম করেছে নৌকার সমর্থকরা। সোমবার সন্ধ্যার আগে উপজেলার হামিরকুৎসা ইউনিয়নের সখোপাড়া গ্রামে হামলায় আহতদের মধ্যে দুই নারীসহ তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতরা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও হামিরকুৎসা ইউনিয়নের সহসভাপতি সাফিনুর নাহার, যুগীপাড়া ইউনিয়নের নারী সদস্য ও যুব মহিলা লীগের সদস্য ইশরাত জাহান বিউটি, স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হকের ভাতিজি পাপিয়া জাহান, শারমিন আক্তার এবং সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক শাহজাহান আলী। এদের মধ্যে সাফিনুর, বিউটি ও শাহজাহানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সাফিনুর নাহার গত দুই ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচন করেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।

উল্লেখ্য, বাগমারায় নৌকার সমর্থকরা এ পর্যন্ত (০১ জানুয়ারি) স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাঁচি প্রতীকের ১৮টি নির্বাচনি ক্যাম্প ২৬ বার ভাঙচুর করে গুড়িয়ে দিয়েছে, এর মধ্যে ১০টিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। উপজেলার ৩৩টি স্থানে কাঁচি প্রতিকের নেতাকর্মীরা হামলার শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনায় মহিলা কর্মীসহ আহত হয়েছেন ৯০ জন নেতাকর্মী।

পুলিশ ও আহতরা জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের কাঁচি প্রতীকের প্রচার চালাতে দুইটি সিএনজি নিয়ে সখোপাড়া গ্রামে যান ছয়জন নারী। তাদের সঙ্গে সেখানে যোগ দেন আরও কয়েকজন নারী। এ সময় তারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌকার প্রার্থী আবুল কালমে আজাদের সমর্থক খোরশেদ আলমের সামনে নারীদের মধ্যে কাঁচি প্রতীকে প্রচারপত্র বিলি করছিলেন।

এ সময় তাদের বাধা দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা সাফিনুরের উপর হামলা করে। এ সময় বিউটি ঘটনা ভিডিও করতে গেলে তার উপরও হামলা করে। নারী ও পুরুষ মিলে তাদের পিটিয়ে জখম করে। খবর পেয়ে সিএনজি চালক তাদের উদ্ধার করতে গেলে তাকেই পিটিয়ে জখম করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

সাফিনুর নাহার বলেন, ‘আলম গিয়ে আমাদের বলে তোমরা নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করছিস কেন? এ এলাকায় নৌকার ছাড়া অন্য কোন প্রতীকের ভোট চাওয়া যাবে না। আমি তার কথা প্রতিবাদ করলে প্রথমে আলমসহ তার পরিবারের সদস্যরা অতর্কিত হামলা করে। এর পর নৌকা প্রতীকের আরও ১০/১২ জন সমর্থক আমাদের ঘিরে ধরে বেধড়ক পেটায়।

রাতে আহতদের হাসপাতালে দেখতে যান টানা তিনবারের এমপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। এ সময় তিনি সাংবাদকেদের বলেন, নৌকার প্রার্থীর ক্যাডার বাহিনী প্রতিনিয়ত কাঁচির সমর্থকদের উপর হামলা, মারধর করে যাচ্ছে। কোন সভ্য প্রার্থী নারীদের উপর হামলা করতে পারে না। আর এই হামলা, মারধরের প্রভাব পড়ছে নির্বাচনে। প্রশাসন কঠোর অবস্থান নিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করতো তাহলে তারা সাহস পেতনা। আমি এ ঘটনার জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার চাই।

এ ব্যাপারে যানতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী ও তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আবুল কালাম আজাদকে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও বাগমারা থানার ওসি অরবিন্দ সরকার ফোন রিসিভ করেননি।

রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল আলম জানান, খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার তিনজনকে হাসপাতালে পাঠায়। বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযোগ দিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।