বান্দরবানে ডেঙ্গু আতঙ্ক, ১০০ নতুন রোগী ভর্তি

বান্দরবানে ডেঙ্গু আতঙ্ক: রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে, হাসপাতালে চাপ

বান্দরবান প্রতিনিধি: বান্দরবান জেলায় ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে না এসে উল্টো বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। সোমবার থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত শুধু সদর হাসপাতালেই নতুন করে ১০০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে সদর হাসপাতালে মোট এক হাজার রোগী ভর্তি হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১০০ জন এখনো চিকিৎসাধীন। গত এক মাসে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এক হাজারেরও বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।

বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. তারেকুল ইসলাম জানান, ১০০ বেডের এই হাসপাতালে ১০০ জন ডেঙ্গু রোগীর ব্যবস্থাপনা করতে গিয়ে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। পুরুষ ওয়ার্ডে আলাদা কর্নার করে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হলেও মহিলা ওয়ার্ডে রোগীর চাপে আলাদা ডেঙ্গু কর্নার স্থাপন কঠিন হয়ে পড়েছে।

গত এক মাসে হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও আন্তঃবিভাগে একত্রে ১৫০ জনেরও বেশি ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।

জেলায় ডেঙ্গুর ‘হটজোন’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে লামা উপজেলা। অক্টোবর মাসে জেলা সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক হাজারেরও বেশি রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন, যার মধ্যে শুধু লামায় ৯০০ জনের বেশি।

লামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা নাদিম জানান, গত দুই মাসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহির্বিভাগ ও আন্তঃবিভাগ মিলে ২২৯ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।

লামার আজিজনগর ও ফাইতং ইউনিয়নের পল্লী চিকিৎসকদের মতে, শুধু এই দুই ইউনিয়নেই গত এক মাসে ৬০০ জনেরও বেশি রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।

আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হানিফ জানান, গত এক মাসে প্রায় ৭০ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। উপজেলার পল্লী চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।

জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, সাধারণত মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যায়। কিন্তু এবার নভেম্বর মাসেও রোগের বিস্তার অব্যাহত রয়েছে, বিশেষ করে উপজেলার পাড়া-মহল্লায়। নানা সংকটের মধ্যেও ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

বিগত বছরগুলোর তুলনায় চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জেলায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে, যা স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।