রাজশাহীতে বিএনপির মনোনয়ন: কৌশলগত সিদ্ধান্তে জয়ের পথে?

রাজশাহীতে বিএনপির মনোনয়ন: কৌশলগতভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত।

টুইট প্রতিবেদক: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গত ৩ নভেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রাজশাহী বিভাগের ৩৯টি আসনের ৩৪টিতে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

রাজশাহী জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনেই দল প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। দলের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, এই মনোনয়ন প্রক্রিয়া স্থানীয় জনপ্রিয়তা, আন্দোলনে অবদান এবং জয়ের সম্ভাবনার ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। ফলে রাজশাহীতে বিএনপির মনোনয়নকে কৌশলগতভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন দলের নেতাকর্মী ও বিশ্লেষকরা।

রাজশাহীতে মনোনীত প্রার্থীরা

রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী): মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দিন (নতুন মুখ, সাবেক মন্ত্রীর ভাই)।

রাজশাহী-২ (সদর): মিজানুর রহমান মিনু (পুরনো প্রার্থী, সাবেক মেয়র)।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর): অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন (পুরনো প্রার্থী)।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা): ডিএম জিয়াউর রহমান (নতুন মুখ, উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক)।

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর): অধ্যাপক নজরুল ইসলাম (পুরনো প্রার্থী)।

রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা): আবু সাঈদ চাঁদ (পুরনো প্রার্থী, সাবেক আহ্বায়ক)।

কেন সঠিক সিদ্ধান্ত?

১. তৃণমূলের মতামতের প্রাধান্য: লন্ডন থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার ভার্চুয়াল বৈঠক করে মতামত নিয়েছেন। প্রতিটি আসনে সার্ভে রিপোর্ট বিবেচনা করা হয়েছে।

২. অভিজ্ঞ ও নতুন মুখের ভারসাম্য: ছয় আসনের মধ্যে চারজন অভিজ্ঞ নেতা (মিনু, মিলন, নজরুল, চাঁদ) এবং দুজন নতুন মুখ (শরীফ উদ্দিন, জিয়াউর রহমান)। এতে দলের পুরনো ভোটব্যাংক ধরে রাখার পাশাপাশি নতুন ভোটারদের আকৃষ্ট করার সম্ভাবনা বেড়েছে।

৩. জয়ের সম্ভাবনা বেশি: আবু সাঈদ চাঁদ চারঘাট-বাঘায় দীর্ঘদিনের জনপ্রিয় নেতা। মিজানুর রহমান মিনু সিটি এলাকায় সাবেক মেয়র হিসেবে পরিচিত। শফিকুল হক মিলন ও নজরুল ইসলামও নিজ নিজ এলাকায় শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন। ডিএম জিয়াউর রহমানের অবস্থানও ভাল।

৪. জোটের জন্য আসন ফাঁকা: বিএনপি পাঁচটি আসন জোট শরিকদের জন্য ছাড় দিয়েছে। এটি জাতীয় ঐক্যকে শক্তিশালী করবে।

বিতর্ক থাকলেও ঐক্য অটুট

কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী রাজশাহী থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন, পাননি। তবে তিনি দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন এবং নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় থাকবেন বলে জানিয়েছেন। মনোনয়নবঞ্চিত কয়েকজন নেতা প্রথমে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও দলের কঠোর শৃঙ্খলার নির্দেশনার পর তারা প্রচারণায় যোগ দিয়েছেন।

বিএনপির রাজশাহী জেলা আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ বলেন, “আমাদের মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। জনগণের রায়ই প্রমাণ করবে এটি কতটা সঠিক ছিল।”

রাজ‌নৈ‌তিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজশাহীতে বিএনপির এবারের মনোনয়ন কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত সঠিক এবং দলকে শক্তিশালী অবস্থানে রেখেছে। আগামী নির্বাচনে এই সিদ্ধান্তের সুফল মিলবে বলে আশা করা যাচ্ছে।