বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ভারতের নতুন সামরিক ঘাঁটি

বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ভারতের নতুন সামরিক ঘাঁটি: তিন গ্যারিসন চালু, ‘চিকেন’স নেক’ আরও সুরক্ষিত।

টুইট প্রতি‌বেদক: বাংলাদেশ সীমান্তের অদূরে ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ‘চিকেন’স নেক’ সিলিগুড়ি করিডোর এলাকায় ভারতীয় সেনাবাহিনী একযোগে তিনটি নতুন সামরিক ঘাঁটি (গ্যারিসন) চালু করেছে। এসব ঘাঁটি ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিরক্ষা বলয়কে আরও শক্তিশালী করে তুলবে বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক সূত্র।

তিন নতুন গ্যারিসন

১. চোপড়া (উত্তর দিনাজপুর, পশ্চিমবঙ্গ) – বাংলাদেশের তেতুলিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে।
২. কিশনগঞ্জ (বিহার) – সিলিগুড়ি করিডোর সংলগ্ন এলাকায়।
৩. বামুনি/বামুনিগাঁও (ধুবরি, আসাম) – ‘লাচিত বরফুকন মিলিটারি স্টেশন’ নামে পরিচিত, যা বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে আকাশপথে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে।

পরিদর্শন ও উদ্বোধন

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর ২০২৫) পূর্বাঞ্চলীয় সেনা কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর. সি. তিওয়ারি একদিনে তিন স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং ধুবরিতে লাচিত বরফুকন মিলিটারি স্টেশনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এই ঘাঁটিগুলো পরিচালনা করছে ব্রহ্মাস্ত্র ও গজরাজ কর্পসের ইউনিটসমূহ।

কেন এখন এই সামরিক উদ্যোগ?

বাংলাদেশের এয়ারবেস আপগ্রেড: লালমনিরহাটে বিমানবাহিনীর নতুন হ্যাঙ্গার নির্মাণ চলমান, যা চিকেন’স নেক থেকে মাত্র ১৬ কিমি দূরে।

পাকিস্তানের আগ্রহ: ঢাকায় সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে পাক সেনা কর্মকর্তাকে “গ্রেটার বাংলাদেশ” মানচিত্র উপহার দেওয়ার ঘটনাকে ভারতীয় মহল ‘সংকেতবাহী’ বলছে।

চীনের ভূমিকা: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পুরনো বিমানঘাঁটি পুনরুজ্জীবনের গুঞ্জনকে কেন্দ্র করে ভারতও দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।

ধুবরির লাচিত বরফুকন স্টেশন

নামকরণ: আহোম সেনাপতি লাচিত বরফুকন, যিনি মুঘল বিরোধী বীর হিসেবে স্মরণীয়।

অবস্থান: বামুনি গ্রামাঞ্চলে ১৯৬ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত।

উদ্দেশ্য: লজিস্টিক, প্রশিক্ষণ ও দ্রুত মোতায়েন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

দূরত্ব: আসামের পশ্চিম সীমান্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে কাছের বড় সেনাঘাঁটি।

লে. জে. তিওয়ারির বার্তা

তিনি সৈন্যদের উদ্দেশে বলেন, “উদীয়মান নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মুখে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি বজায় রাখতে হবে। সেনা-নাগরিক সহযোগিতা আমাদের কৌশলগত শক্তি।”

ভারতীয় গণমাধ্যম (India Today): “চিকেন’স নেক এখন আরও অভেদ্য।”

বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম (প্রথম আলো): ভারতের সামরিক অবস্থান নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

২২ কিলোমিটার প্রশস্ত সিলিগুড়ি করিডোর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত রাখে। নতুন তিন গ্যারিসন চালুর মাধ্যমে ভারত এখন এই করিডোরের আকাশ, স্থল ও সীমান্ত নিরাপত্তাকে বহুস্তরে শক্তিশালী করছে।

ভারতীয় সেনা মুখপাত্রের ভাষায়:
“এটি শুধু প্রতিরক্ষা নয়, উন্নয়ন ও আস্থার প্রতীকও।”