বান্দরবানে উদ্যোক্তা ও পিঠা মেলা শুরু

৫০ স্টলে গরমাগরম পিঠা • ৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে • চকলেট-পিঠা থেকে খোলাজালি, সবই আছে!
বান্দরবান প্রতিনিধি (অসীম রায় অশ্বিনী): শীতের আমেজে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে এবং স্থানীয় উদ্যোক্তাদের বিকাশে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে “উদ্যোক্তা ও পিঠা মেলা–২০২৫”।
গতকাল ৪ নভেম্বর বিকেলে এক বর্ণাঢ্য আয়োজনে মেলার উদ্বোধন করেন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই।
মেলার উদ্বোধন উপলক্ষে বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়, যা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ কাওছার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আবু তালেব, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস. এম. হাসান, এবং পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল মনসুর।
বান্দরবানের পিঠা মেলায় শীতের ডাক
এসো পাহাড়ে,
ভাপা পিঠার ধোঁয়ায় মিশে আছে মাটির ঘ্রাণ,
হাসি-আনন্দে গেয়ে ওঠে গ্রামবাংলার গান।বান্দরবান এখন উৎসবের শহর—
পিঠার গন্ধে, রঙে, আর হৃদয়ের উষ্ণতায় ভরা!
বক্তারা বলেন, “এ ধরনের মেলা স্থানীয় অর্থনীতিকে সচল রাখে, নতুন উদ্যোক্তাদের আত্মপ্রকাশের সুযোগ দেয়, এবং তরুণ প্রজন্মকে গ্রামীণ ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত করে। শীতের পিঠা আমাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বহমান।”
মেলায় অংশ নিয়েছেন প্রায় ৫০ জন স্থানীয় উদ্যোক্তা, যাদের স্টলে স্থান পেয়েছে বিভিন্ন রকম দেশি ও বিদেশি পিঠা। পাটিসাপটা, ভাপা, চিতই, নকশি, পুলি, খোলাজালি, ছাঁচ পিঠা— এমনকি চকলেট পিঠা ও ফলের পিঠাও রয়েছে দর্শনার্থীদের আকর্ষণে।
অনেক উদ্যোক্তা নিজেদের স্টলে বসেই গরমাগরম পিঠা বানিয়ে বিক্রি করছেন, যা মেলায় আগতদের বিশেষ আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
মেলায় সকাল থেকে রাত অবধি দর্শনার্থীদের ভিড়। পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব নিয়ে সবাই ভিড় করছেন পিঠার স্টলে।স্থানীয় বাসিন্দা রিনা মার্মা বলেন, “বছরজুড়ে এই মেলার জন্য অপেক্ষা করি। বাড়িতে পিঠা বানানোর চেয়ে এখানে খেতে অন্যরকম আনন্দ লাগে। সবার হাসি-আনন্দে মেলাটা যেন উৎসবে পরিণত হয়েছে।”
মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে।আগামী ৮ নভেম্বর মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে স্থানীয় শিল্পীরা পরিবেশন করবেন নাচ, গান ও নাটিকা।
মেলার আয়োজকরা জানান, উদ্যোক্তা ও পিঠা মেলা এখন বান্দরবানের এক সাংস্কৃতিক উৎসবে রূপ নিয়েছে, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে প্রাণচাঞ্চল্য আনছে এবং নারী উদ্যোক্তাদেরও উৎসাহিত করছে।







