হ্নীলা পাহাড়ে পুলিশের গোপন অভিযানে উদ্ধার ২৫ জন

টেকনাফের পাহাড়ে মানবপাচার চক্রের আস্তানা থেকে নারী-শিশুসহ ২৫ জন উদ্ধার।

কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের টেকনাফে মানবপাচারের উদ্দেশ্যে পাহাড়ে আটকে রাখা নারী ও শিশুসহ ২৫ জনকে উদ্ধার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

সোমবার (৪ নভেম্বর) ভোররাতে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়।

টেকনাফ থানার ওসি (তদন্ত) মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি বিশেষ দল হ্নীলা ইউনিয়নের নাফনদী সংলগ্ন গহীন পাহাড়ে অভিযান চালায়। সেখানে একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে মানবপাচারকারী চক্র ১০ নারী, ৫ শিশু ও ১০ পুরুষসহ মোট ২৫ জনকে মালয়েশিয়া পাঠানোর নামে আটকে রেখেছিল।

অভিযানে মানবপাচার চক্রের সদস্যরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। তবে পুলিশ অভিযান শেষে সকল ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

ওসি বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, উদ্ধারকৃতরা বিভিন্ন জেলা থেকে সীমান্ত পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রলোভনে এখানে আনা হয়েছিল। পাচারকারীরা তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।”

উদ্ধারকৃতদের মধ্যে চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও কক্সবাজার জেলার বাসিন্দা রয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন নারী জানান, দালালচক্র চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে পাহাড়ি এলাকায় এনে কয়েকদিন ধরে আটক রাখে।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযানের সময় পাচারকারীরা নাফনদীর দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তাদের ধরতে সীমান্ত এলাকায় বিজিবিকেও সতর্ক করা হয়েছে।

উদ্ধারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের পরিবারকে খবর দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে পাচারচক্রের মূল হোতাদের গ্রেপ্তারের জন্য বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, টেকনাফের সীমান্তবর্তী কিছু পাহাড়ি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় রয়েছে মানবপাচার চক্র। তারা মৌসুমি সুযোগে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এনে মিয়ানমার সীমান্ত হয়ে মালয়েশিয়া পাঠানোর চেষ্টা করে। এদের বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযান চালানো হলেও চক্রটি প্রতিবার নতুনভাবে সংগঠিত হয়।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বক্তব্য

কক্সবাজার জেলা পুলিশ জানিয়েছে, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন উপকূলজুড়ে মানবপাচার প্রতিরোধে নিয়মিত টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া প্রত্যেককে আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হবে এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হবে।