পার্বত্য চট্টগ্রামে বিএনপির মিশ্রণ কৌশল

পার্বত্য চট্টগ্রামে বিএনপির নির্বাচনী কৌশল: নতুন মুখের পাশাপাশি অভিজ্ঞ নেতাদের উপর আস্থা।

অসীম রায় (অশ্বিনী), বান্দরবান প্রতিনিধি: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি সংবেদনশীল আসনে বিএনপি প্রার্থী নির্বাচনে সুষম কৌশল গ্রহণ করেছে। রাঙামাটিতে নতুন মুখ অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে অভিজ্ঞ নেতাদের ওপর আস্থা রাখা হয়েছে।

এই ঘোষণা সোমবার (৩ নভেম্বর) দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে করেন।

বিএনপি মোট ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের এই তিন আসনে (২৯৮, ২৯৯ ও ৩০০ নং) উপজাতি ও বাঙালি ভোটারের ভারসাম্য রক্ষা করা দলীয় নেতৃত্বের জন্য চ্যালেঞ্জ। পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্বায়ত্তশাসন ও শান্তি চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

জনসংখ্যার প্রায় ৫০% উপজাতি, বাকিটা বাঙালি, যার মধ্যে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করে।

রাঙামাটি: নতুন আশা

রাঙামাটি-২৯৯ নং আসনে দীপেন দেওয়ান প্রথমবারের মতো মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ধর্ম বিষয়ক সহ-সম্পাদক এবং সাবেক যুগ্ম জেলা জজ। স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তার মনোনয়নকে স্বাগত জানিয়েছেন। দীপেন দেওয়ান জানিয়েছেন, “উপজাতি-বাঙালি ঐক্যের ভিত্তিতে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।”

খাগড়াছড়ি: অভিজ্ঞতার ভরসা

খাগড়াছড়ি-২৯৮ নং আসনে দলীয় জ্যেষ্ঠ নেতা আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া মনোনয়ন পেয়েছেন। দুইবার সাবেক সংসদ সদস্য এবং জেলা বিএনপির সভাপতি ভূঁইয়া বলেন, “শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন ও অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য লড়ব।”

বান্দরবান: পারিবারিক উত্তরাধিকার

বান্দরবান-৩০০ নং আসনে সাচিং প্রু জেরীকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য এবং জেলা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তার বাবা অং শৈ প্রু চৌধুরী ১৯৮৮ সালে একই আসন থেকে বিএনপির হয়ে জয়ী হন। জেরী বলেন, “নির্বাচনকে ঘিরে অপপ্রচার হলেও আমরা জনগণের পাশে থাকব।”

চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনীতি দীর্ঘ এবং জটিল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর থেকে অঞ্চলটি রাজনৈতিক উত্তেজনায় পরিপূর্ণ। বিএনপির নতুন ও পুরনো নেতাদের সংমিশ্রণ ভোটার আকর্ষণের লক্ষ্য রাখলেও, অন্যান্য দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করবে।

স্থানীয় বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই তিন আসনে বিএনপির জয়লাভ হলে পাহাড়ি রাজনীতিতে নতুন গতি আসতে পারে।