বান্দরবান পৌরসভায় ৯ মেধাবীর হাতে নিয়োগপত্র

বান্দরবান পৌরসভায় ২০ বছর পর স্বচ্ছ নিয়োগ: পে অর্ডারের মাধ্যমে ৯ জনের হাতে নিয়োগপত্র।
বান্দরবান প্রতিনিধি: দীর্ঘ ২০ বছরের জনবল সংকটের অবসান ঘটিয়ে বান্দরবান পৌরসভায় শতভাগ স্বচ্ছতা ও মেধার ভিত্তিতে ৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনো তদবির, ঘুষ বা স্বজনপ্রীতির ছোঁয়া লাগেনি—শুধুমাত্র পে অর্ডারের মাধ্যমে আবেদন ফি জমা দিয়ে যোগ্য প্রার্থীরা এ সুযোগ লাভ করেছেন।
রোববার (২ নভেম্বর) পৌরসভার কনফারেন্স রুমে আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগপত্র তুলে দেন পৌর প্রশাসক এস এম মনজুরুল হক। এ ঘটনাকে পৌরসভার ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।
নিয়োগপ্রাপ্ত ৯ জন কর্মী ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের বিভিন্ন পদে যোগদান করবেন। তারা জানান, এ নিয়োগ তাদের বেকারত্বের অন্ধকার দূর করে পরিবারে স্বস্তি এনেছে। “আমরা কখনো ভাবিনি পৌরসভায় ঘুষ বা তদবির ছাড়া চাকরি হবে। মাত্র ১০০-১৫০ টাকা আবেদন ফি দিয়ে এত বড় সুযোগ পাওয়া যায়—এটা অবিশ্বাস্য!” বলে আনন্দ প্রকাশ করেন এক নবনিয়োগপ্রাপ্ত। তারা ভবিষ্যতে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার করেন এবং সারাদেশে এ ধরনের স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া চালুর দাবি জানান।
পৌর প্রশাসক এস এম মনজুরুল হক বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকটে পৌরসভার দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছিল। সকল নিয়মনীতি মেনে শুধু পে অর্ডারের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচন করা হয়েছে। আমরা শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেছি। আশা করি, তারা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করবেন এবং বান্দরবান পৌরবাসীর কল্যাণে অবদান রাখবেন।” তিনি আরও যোগ করেন, “মেধা ও যোগ্যতাই চাকরি লাভের একমাত্র মাপকাঠি হোক—এটাই আমাদের লক্ষ্য।”
নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তথ্য অনুসারে, মোট ৩৪০ জন প্রার্থী আবেদন করেন। এর মধ্যে ২৭২ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে ৯ জনকে নির্বাচিত করা হয়। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সম্পন্ন হয়েছে বলে পৌর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়েজুর রহমান, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. নুরুল আমিন চৌধুরী আরমান, প্রশাসনিক কর্মকর্তা করুনা কান্তি বড়ুয়াসহ পৌরসভার বিভিন্ন কর্মকর্তা।
এ নিয়োগকে ‘ঐতিহাসিক দিন’ আখ্যায়িত করে প্রশাসক বলেন, “যে কারও মেধা থাকলে চাকরির দুয়ার খোলা—এর বাস্তব প্রমাণ এই ৯টি নিয়োগ।” নবনিয়োগপ্রাপ্তদের উদ্দেশে তিনি শুভকামনা জানিয়ে বলেন, “আপনাদের পথচলা পৌরবাসীর জন্য কল্যাণময় হোক।”






