জামালপুরে বিষাক্ত এসিডে ৪ গরুর মৃত্যু, ১৬ আটক

জামালপুরে অবৈধ ব্যাটারি কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে ৪টি গরুর মৃত্যু, ৮টি চিকিৎসাধীন : ১৬ জনকে পুলিশ আটক।
টুইট ডেস্ক: জামালপুর সদর উপজেলার ইটাইল ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে একটি অবৈধ পুরনো ব্যাটারি পোড়ানো কারখানার এসিড ও বিষাক্ত বর্জ্যে দূষিত ঘাস ও পানি খেয়ে স্থানীয় দরিদ্র কৃষক হেকমত আলীর ১২টি গরুর মধ্যে ৪টি মারা গেছে। একই ঘটনায় তার বাকি ৮টি গরু অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এছাড়া এলাকায় শতাধিক গবাদিপশু প্রভাবিত হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। কারখানার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ১৬ থেকে ১৮ জনকে আটক করেছে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হেকমত আলী নামক কৃষকের গরুরা কারখানার পাশের কৃষিজমিতে ঘাস খেতে গিয়ে এসিডযুক্ত ঘাস এবং নদীর দূষিত পানি খায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই গরুরা অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং ৪টি (কিছু সূত্রে ৫টি) মারা যায়। বাকি গরুগুলোকে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অফিসের চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
হেকমত আলী ভাঙা কণ্ঠে বলেন, “কারখানার এসিডে সব গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। হে আল্লাহ, আমি এখন কী করব!” তিনি জমিজমা না থাকায় গরু পালন করে দুধ বিক্রি করে সংসার চালান। এই ক্ষতি তার জন্য মর্মান্তিক।
কারখানার অবৈধ কার্যকলাপ
কারখানাটি জামালপুর সদরের তুলশীরচর ইউনিয়নের ডিগ্রিচরে ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে অবস্থিত। এখানে অসাধু ব্যবসায়ীরা রাতের অন্ধকারে পুরনো ব্যাটারি পোড়িয়ে সিসা (লেড) উদ্ধার করে। এতে উৎপন্ন বিষাক্ত ধোঁয়া, এসিড এবং বর্জ্য জমি, বাতাস ও নদীর পানিতে মিশে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। কোনো পরিবেশগত অনুমোদন ছাড়াই চলছে এই কারখানা। মময়নসিংহ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. সোলাইমান সরকার জানান, “কারখানার বর্জ্য নদী ও জমিতে মিশে গবাদিপশুর মৃত্যুর কারণ হয়েছে। এটি মানুষের জন্যও ক্ষতিকর।”
পুলিশের ব্যবস্থা
জনরোষের মুখে পুলিশ তৎক্ষণাত কারখানায় অভিযান চালায়। নরুন্দি তদন্ত কেন্দ্রের ওসি মো. সজিব রহমান জানান, “জনরোষানল থেকে ১৭ জন শ্রমিককে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। মালিক পক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে সকল দোষীকে আইনের আওতায় আনা হবে।” কালের কণ্ঠের প্রতিবেদনে ১৬ জন আটকের উল্লেখ রয়েছে। তদন্ত চলছে।
এলাকায় জনমনে তীব্র ক্ষোভ। স্থানীয়রা ক্ষতিপূরণ, কারখানা বন্ধ এবং পরিবেশ রক্ষার দাবি জানাচ্ছেন। এমন ঘটনা পুনরাবৃত্তি রোধে কর্তৃপক্ষের কঠোর ব্যবস্থা জরুরি।






