যুবদলের ৪৭তম জয়যাত্রা: দেশজুড়ে উদযাপনের ঢল

যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী: জিয়ার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে গণতন্ত্র-উন্নয়নের শপথ নিলেন হাজারো যুবক।
বদিউল আলম লিংকন: শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাতে ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী সারা দেশে অভূতপূর্ব উৎসাহে উদযাপিত হয়েছে। ২৭-২৮ অক্টোবর দুই দিন ধরে ৬৪টি জেলা এবং প্রায় সকল উপজেলায় র্যালি, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প এবং সেবামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে এই উদযাপন সম্পন্ন হয়।
সারাদেশে যুবদলের নেতাকর্মীরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, জাতীয় উন্নয়ন এবং শহীদ জিয়ার আদর্শ রক্ষার প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে শহীদ জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে, যখন স্থানীয় পর্যায়ে হাজার হাজার যুবক মাঠে নেমেছে।
বান্দরবান জেলা
বান্দরবানে জেলা যুবদলের সভাপতি জহির উদ্দিন চৌধুরী মাসুম এবং সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে ২৭ অক্টোবর বিকেলে কেন্দ্রীয় ঈদগাঁ মাঠ থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। ব্যানার-প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে নেতাকর্মীরা প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুক্তমঞ্চ চত্বরে সমবেত হয়।
সেখানে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি জহির উদ্দিন মাসুম বলেন, “যুবদল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে অগ্রণী এবং ত্যাগ-সাহসের মাধ্যমে মাঠে থাকবে।” সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট আমিন উল্লাহ বিপ্লবসহ শতাধিক নেতা বক্তব্য রাখেন। এই আয়োজনে শহীদ জিয়ার আদর্শ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধতার আহ্বান জানানো হয়।
বগুড়া জেলা (দুপচাঁচিয়া উপজেলা)
দুপচাঁচিয়া উপজেলা ও পৌর যুবদলের উদ্যোগে দিনব্যাপী কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সকালে জাতীয় পতাকা ওড়ানোর মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়, যা উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের নেতৃত্বে প্রধান চত্বরে শেষ হয়। আলোচনা সভায় বক্তারা যুবদলের ঐতিহাসিক ভূমিকা তুলে ধরেন এবং আন্দোলনের এই সময়ে যুবকদের সক্রিয়তার আহ্বান জানান। স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলেন, “শহীদ জিয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য যুবদল সর্বদা প্রস্তুত।”
দিনাজপুর জেলা (বীরগঞ্জ উপজেলা)
বীরগঞ্জ উপজেলা ও পৌর যুবদলের যৌথ আয়োজনে ২৮ অক্টোবর বর্ণাঢ্য র্যালি এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। হাজারো নেতাকর্মী অংশ নেয়, যাতে প্ল্যাকার্ডে “যুব-ঐক্য-প্রগতি” স্লোগান উড়ে। সভায় জেলা পর্যায়ের নেতারা গণতন্ত্র রক্ষা এবং জাতীয় সার্বভৌমত্বের উপর জোর দেন। এই উদযাপন উপজেলার যুবশক্তির উদ্দীপনা প্রদর্শন করে।
ঝালকাঠি জেলা (নলছিটি উপজেলা)
নলছিটি উপজেলা যুবদল ও পৌর যুবদলের আয়োজনে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প এবং ঔষধ বিতরণ কর্মসূচি চালু হয়। ২৮ অক্টোবর সকাল থেকে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানে শত শত স্থানীয় জনগণ উপকৃত হন। সভায় বক্তারা বলেন, “যুবদল শুধু রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, জনকল্যাণের সংগঠন।” এই সেবামূলক কাজ যুবদলের সামাজিক দায়িত্বশীলতার প্রতীক হয়ে ওঠে।
টাঙ্গাইল জেলা (নাগরপুর উপজেলা)
নাগরপুরে সকাল থেকে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপন সম্পন্ন হয়। উপজেলা যুবদলের নেতৃত্বে র্যালি বের হয়ে প্রধান চত্বরে সমবেত হয়, যেখানে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা শহীদ জিয়ার হাতে গড়া যুবদলের ঐতিহ্য তুলে ধরেন এবং দেশের উন্নয়নে যুবকদের ভূমিকার উপর আলোচনা করেন। এই কর্মসূচি স্থানীয় যুবকদের মধ্যে উদ্দীপনা সঞ্চার করে।
কুমিল্লা জেলা (দাউদকান্দি উপজেলা)
দাউদকান্দিতে বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভা এবং দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা যুবদলের সভাপতির নেতৃত্বে র্যালিতে শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। সভায় বক্তারা বলেন, “আন্দোলনের এই মুহূর্তে ত্যাগস্বীকারিতা দেখাতে হবে।” এই আয়োজন সামাজিক সেবা এবং রাজনৈতিক সচেতনতা যুক্ত করে।
সিরাজগঞ্জ জেলা (তাড়াশ উপজেলা)
তাড়াশে মোহুরি অফিস চত্বর থেকে শুরু হওয়া র্যালি পৌরসভায় শেষ হয়। উপজেলা যুবদলের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন, যাতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং জিয়া আদর্শের উপর জোর দেওয়া হয়। র্যালিতে পতাকা ও স্লোগানের মাধ্যমে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।
ভোলা জেলা
জেলা যুবদলের আয়োজনে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়, যাতে হাজারো যুবক অংশ নেয়। ২৭ অক্টোবর সকালে শুরু হওয়া এই শোভাযাত্রা প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে চত্বরে সমাপ্ত হয়। সভায় বক্তারা যুবদলের সংগ্রামী ইতিহাস তুলে ধরেন এবং ভবিষ্যতের উন্নয়নমূলক কর্মসূচির কথা বলেন।
জামালপুর জেলা
জেলা ইউনিটের উদ্যোগে র্যালি এবং সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় নেতাকর্মীরা বর্ণাঢ্য পোশাকে অংশ নেয়, যাতে শহীদ জিয়ার ছবি এবং স্লোগান উড়ে। সভায় আলোচনা হয় যুবদলের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ভূমিকা নিয়ে।
ঢাকা জেলা (তেজগাঁও থানা)
তেজগাঁও থানা যুবদলের উদ্যোগে বিভিন্ন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়, যার মধ্যে ভিডিওর মাধ্যমে অংশগ্রহণ এবং স্থানীয় সমাবেশ অন্তর্ভুক্ত। যুগ্ন আহবায়ক ইসমাইল হোসেন বাবুর নেতৃত্বে র্যালি বের হয়, যাতে যুবকরা গণতন্ত্রের দাবি তুলে ধরেন।
নওগাঁ জেলা (আত্রাই উপজেলা)
আত্রাইয়ে ২৮ অক্টোবর বর্ণাঢ্য ও উৎসবমুখর আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপন সম্পন্ন হয়। জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে গতকাল থেকে শুরু হওয়া কর্মসূচিতে র্যালি এবং সভা অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা যুবদলের ঐতিহ্য এবং আন্দোলনের ত্যাগের কথা তুলে ধরেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা
চুয়াডাঙ্গায় জাতি ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। বিএনপি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আফরোজা খানম রিতা বক্তব্য রাখেন, যাতে যুবদলের গণতন্ত্র রক্ষায় ভূমিকার উপর জোর দেওয়া হয়। বর্ণাঢ্য র্যালি শহরের প্রধান অংশ প্রদক্ষিণ করে।
গাজীপুর জেলা (টঙ্গী ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা)
টঙ্গীতে ২৮ অক্টোবর বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ও পৌর যুবদলের আয়োজনে যুব সমাবেশে প্রধান অতিথি এস এম জিলানী (স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি) বক্তব্য রাখেন। র্যালিতে হাজারো যুবক অংশ নেয়, যাতে “যুব-ঐক্য-প্রগতি” স্লোগান উড়ে।
মেহেরপুর জেলা
মেহেরপুরে জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মো: মুশাররফ হোসেন তপু এবং সদস্য মেহেদির নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। ২৭ অক্টোবর সকালে শুরু হওয়া এই র্যালিতে কাউসার আলীসহ নেতারা অংশ নেন। সভায় গণতন্ত্র এবং উন্নয়নের উপর আলোচনা হয়।
রাজবাড়ী জেলা (পাংশা উপজেলা)
পাংশা উপজেলা ও পৌর যুবদলের আয়োজনে ২৮ অক্টোবর বিকালে শহরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌর সভার নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সভায় যুবদলের সংগ্রামী ইতিহাস এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা বলা হয়।
কু্রিগ্রাম জেলা (রৌমারী উপজেলা)
রৌমারীতে যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হয়। উপজেলা পর্যায়ে র্যালি এবং সভার মাধ্যমে উদযাপন করা হয়, যাতে স্থানীয় যুবকরা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণের শপথ নেয়।
নাটোর জেলা (লালপুর উপজেলা)
লালপুরে যুবদলের উদ্যোগে ২৭ অক্টোবর বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালির পর সভায় বক্তারা যুবদলের ঐতিহ্য এবং জনকল্যাণের কাজের উপর আলোচনা করেন। এই আয়োজন উপজেলার যুবশক্তিকে একত্রিত করে।
ঠাকুরগাঁও জেলা
“যুব-ঐক্য-প্রগতি” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জেলা যুবদল বর্ণাঢ্য আয়োজন করে। ২৭ অক্টোবর শোভাযাত্রা এবং সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, যাতে উপজেলা যুবদলের নেতারা অংশ নেন। বক্তারা শহীদ জিয়ার রূহের শান্তিতে দোয়া আদায় করেন।
সিলেট জেলা
সিলেটে যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হয়, যাতে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলনে যুবদলের অগ্রণী ভূমিকা তুলে ধরা হয়। র্যালি এবং সভার মাধ্যমে যুবকরা মাঠে অবতরণ করে।
অন্যান্য জেলায় অনুরূপ উদযাপন
সারাদেশের অবশিষ্ট জেলাগুলোতে (যেমন: বরিশাল, চট্টগ্রাম, খুলনা, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা বহির্ভূত অংশসহ) অনুরূপভাবে র্যালি, শোভাযাত্রা এবং সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিএনপির নেতারা বিভিন্ন স্থানে অংশ নিয়ে যুবদলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সকল আয়োজনে মূল বার্তা ছিল:
“ত্যাগ-সাহস নিয়ে মাঠে থাকুন, দেশের উন্নয়নে অবদান রাখুন।”
এই ৪৭তম বার্ষিকী যুবদলের সাংগঠনিক শক্তি এবং যুবশক্তির প্রদর্শনী হয়ে ওঠে। সারাদেশে কয়েক লক্ষাধিক নেতাকর্মীর অংশগ্রহণ এই সংগঠনের গ্রাম-শহর প্রসারিত প্রভাবের সাক্ষ্য।
ভবিষ্যতে এই আন্দোলন আরও তীব্রতর হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।







