রাজশাহীতে ২ চিকিৎসক হত্যাকান্ডে একই বেশে খুনিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে এক রাতে দুই চিকিৎসককে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গত রোববার রাতে আড়াই ঘণ্টার ব্যবধানে রাজশাহী নগরীর শাহ মখদুম এবং রাজপাড়া থানা এলাকা থেকে দুই চিকিৎসকের লাশ উদ্ধার করা হয়। দুই খুনের ঘটনায় আলাদা মামলা হলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।

তবে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা এবং ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজ সূত্রে জানা গেছে, দুটি ঘটনাতেই দুর্বৃত্তরা ছাই কালারের হাইস্ট মাইক্রোবাস নিয়ে এসেছিল। কাপড়ে তাদের মুখ ঢাকা ছিল। উভয় ঘটনায় হামলাকারী একজনের হাতে একটি লাঠি ছিল।

নিহত দুজন হলেন, যৌন ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ গোলাম কাজেম আলী আহমদ (৪২) এবং পল্লিচিকিৎসক এরশাদ আলী দুলাল (৪৫)। কাজেম রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) এমবিবিএস ৪২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। শিক্ষাজীবনে তিনি ছাত্রশিবিরের রামেক শাখার সভাপতি ছিলেন বলে জানা গেছে।

পল্লিচিকিৎসক এরশাদ আলীর চন্দ্রিমা থানার কৃষ্টগঞ্জ বাজারে দোকান রয়েছে। দোকানে থাকা সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৩৩ মিনিটের পর পাঁচ-ছয়জন ব্যক্তি মাইক্রোবাসে করে এসে দোকান থেকে এরশাদ আলীকে তুলে নিয়ে যায়। রাত ৯টার দিকে শাহ মখদুম থানার সিটিহাট এলাকায় রাস্তার পাশে তাঁর রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়।

এর আড়াই ঘণ্টা পর রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানার বর্ণালী মোড় এলাকায় ডা. কাজেম আলীকে ছুরিকাঘাত করে মাইক্রোবাসে একই বেশে আসা সন্ত্রাসীরা। পরে স্থানীয়রা তাঁকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী গ্লোবাল ফার্মার মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ মো. শাহীনুজ্জামানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। শাহীনের দেওয়া ভাষ্য উল্লেখ করে পুলিশ জানায়, রাতে শাহীনের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে চেম্বার থেকে বাসায় ফিরছিলেন ডা. কাজেম আলী। একপর্যায়ে পেছন থেকে একটি মাইক্রোবাস এসে তাঁদের গতি রোধ করে।

এরপর মাইক্রোবাস থেকে তিনজন ব্যক্তি নেমে আসে। একজন ডা. কাজেমের পায়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। পরে ডা. কাজেম মোটরসাইকেল থেকে নামলে একজন তাঁর বুকে ছুরিকাঘাত করে। এরপর হামলাকারী সবাই মাইক্রোবাস নিয়ে পালিয়ে যায়।

নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি রফিকুল হক বলেন, ডা. কাজেম হত্যার ঘটনায় তাঁর স্ত্রী ডা. ফারহানা ইয়াসমিন হত্যা মামলা করেছেন।

চন্দ্রিমা থানার ওসি মাহবুব আলম বলেন, এরশাদ আলী খুনের ঘটনায় তাঁর ভাই রুহুল আমিন বাদী হয়ে চন্দ্রিমা থানায় মামলা করেছেন।