ট্রাইব্যুনালের ঐতিহাসিক নির্দেশে ১৫ সেনা কর্মকর্তা কারাগারে

ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ: ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ

টুইট প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে টিএফআই-জেআইসি সেলের অধীনে সংঘটিত গুম, খুন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের তিনটি পৃথক মামলায় ১৫ জন বর্তমান ও সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)-১।

বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার পর বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

গ্রেপ্তার ও হেফাজত প্রক্রিয়া

গত ৮ অক্টোবর এই মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। ১১ অক্টোবর সেনা সদরের এক ব্রিফিংয়ে মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান জানান, মোট ২৫ জন অভিযুক্তের মধ্যে ১৫ জন সেনা হেফাজতে রয়েছেন। এদের মধ্যে একজন (মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ) আত্মগোপনে, আর বাকি ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

৯ অক্টোবরের মধ্যে ১৬ জনকে সেনা সদরে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িক কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

আদালতের অতিরিক্ত নির্দেশনা

ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের আদালতে হাজির করতে একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২০ নভেম্বর ২০২৫।

অভিযুক্তদের ২১ অক্টোবরের মধ্যে গ্রেপ্তার করে ২২ অক্টোবর আদালতে হাজির করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল।

এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবার, যখন চাকরিরত অবস্থায় এত সংখ্যক সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতার নির্দেশ জারি হয়েছে এবং তাদের বেসামরিক আদালতে বিচার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনাটি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে জবাবদিহির নতুন অধ্যায় সূচিত করতে পারে।

অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছে ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ প্রধানসহ মোট ২৫ জন সেনা কর্মকর্তা।