বান্দরবানে ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’-এ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প

অসহায় রোগীদের মুখে হাসি ফুটালো পৌরসভা

বান্দরবান প্রতি‌নি‌ধি: পাহাড়ি জনপদ বান্দরবানে ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’-কে ঘিরে মানবিক উদ্যোগের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বান্দরবান পৌরসভা। পৌরসভা প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক বৃহৎ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে শতাধিক অসহায় ও দরিদ্র রোগী বিনামূল্যে চিকিৎসা, ওষুধ এবং চক্ষু পরীক্ষা গ্রহণ করেছেন।

এই জনকল্যাণমূলক ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “স্বাস্থ্যসেবা হলো মানবতার প্রধান দায়িত্ব। পৌরসভার এই উদ্যোগ অসহায় মানুষের কষ্ট লাঘব করবে। সমাজের বিত্তবানদেরও এই উদ্যোগে অংশ নেওয়া উচিত।” তাঁর বক্তব্যে উপস্থিত দর্শকরা করতালিতে মুখরিত হয়ে সাড়া দেন।

ক্যাম্পে চক্ষু, সাধারণ রোগ, চর্মরোগসহ বিভিন্ন শাখার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সেবা দেন। বায়তুশ শরফ চক্ষু হাসপাতালের ডা. ইসলাম ফাহিম চক্ষু বিভাগের নেতৃত্বে রোগীদের বিনামূল্যে চোখ পরীক্ষা ও চিকিৎসা প্রদান করেন। এছাড়া পেটের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগসহ জটিল রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পৌরসভার অর্থায়নে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

ক্যাম্পে আগত রোগীদের মধ্যে বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হয়, যা তাদের আর্থিক চাপ কমাতে বড় ভূমিকা রাখে। অনেকেই বলেন, এই উদ্যোগ তাদের জীবনযাত্রা সহজ করে দিয়েছে।

উদ্যোগের সফল বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন পৌরসভার প্রশাসক এস এম মনজুরুল, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়েজুর রহমান, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট কালাম, হিসাব রক্ষণাবেক্ষক নুরুল আমিন চৌধুরী আরমান, প্রশাসনিক কর্মকর্তা করুণা কান্তি বড়য়াসহ পৌরসভার বিভিন্ন কর্মকর্তা। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড থেকে শতাধিক রোগী ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই ক্যাম্পে অংশ নেন।

একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “পৌরসভার এই উদ্যোগ আমাদের মতো গরিবদের জন্য আশীর্বাদ। আগে চোখের চিকিৎসার জন্য শহরে যেতে হতো, এখন সব সেবা দরজার কাছে।” আরেকজন বয়স্ক রোগী জানান, “বিনামূল্যে ওষুধ পেয়ে মনটা শান্ত হয়েছে। পৌরসভার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।”

বান্দরবানের মতো দুর্গম এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা দীর্ঘদিন ধরেই সীমিত। এই উদ্যোগকে স্থানীয়রা দেখছেন আশার আলো হিসেবে। পৌরসভা জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প নিয়মিত আয়োজন করা হবে, যাতে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিটি মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যায়।

স্থানীয়দের ভাষায়— “পৌরসভা আমাদের পাশে এসেছে, এটাই সত্যিকারের সেবা।”