নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে জানালেন শেখ হাসিনা

টুইট ডেস্ক : তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনতে বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনের মধ্যে আগামী দ্বাদশ সংসদের ভোটের আগে নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে তা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে যেভাবে নির্বাচনকালীন সরকার পরিচালনা করা হয়েছিল এবারও একই রকম পরিকল্পনার কথা বলেছেন তিনি।

মঙ্গলবার গণভবনে বেলজিয়ামের ব্রাসেলস সফর নিয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও কানাডার মতো সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে যেভাবে নির্বাচনকালীন সরকার থাকে, সেভাবে চলবে।

“অর্থাৎ সেসময় আমরা যারা থাকব, আমরাই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে আমাদের রুটিন ওয়ার্ক দায়িত্বপালন, দৈনন্দিন কাজকর্ম করব, যাতে সরকার অচল হয়ে না যায়, সেটা আমরা করব, সেভাবে চলবে।”

২০১৮ সালের নভেম্বরে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের দিন টেকনোক্র্যাট চার মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলা হয় এবং তারা পদত্যাগপত্র জমাও দেন। বাকি মন্ত্রীরা সবাই রুটিন কাজ করে গেছেন।

সেসময় যেসব মন্ত্রী পদত্যাগপত্র দিয়েছিলেন, তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয় এক মাস পর অর্থাৎ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর ঠিক আগের দিন।

এর আগে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের আগের সর্বদলীয় নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরোনো কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে নতুন করে ছয়জনকে যুক্ত করা হয়।

২৯ সদস্যের নির্বাচনকালীন ওই মন্ত্রিসভায় সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল বিরোধী দল থেকেও দুইজনকে রাখা হয়। ওই মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার জন্য বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও দলটি আসেনি।

এদিন সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের আরপিও অনুযায়ী যখন নির্বাচনের সময় ঘোষণা হবে, মনোনয়নপত্র দাখিল হবে, তখন থেকে আর সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা মন্ত্রীরা ব্যবহার করতে পারবে না, পতাকা বা কোনো সুবিধা ব্যবহার করতে পারবে না। তখন একজন প্রার্থী হিসেবেই তাদেরকে ভোট চাইতে হবে।”

২০১৪ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচনের আগে মন্ত্রিসভা ছোট করা হলেও এবার তেমন পরিকল্পনা না থাকার কথা বলেছেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, “১৪-তে আমি কিছু মন্ত্রী অন্যান্য দল থেকে নিয়োগ করেছিলাম, এরপর ১৮-তে সেই পদ্ধতি করি নাই, যেটা অন্যান্য দেশে হয়-এইবারও সেভাবে হবে।”

এবারও প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণা শুরু হলে মন্ত্রীরা আর সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করবেন না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নির্বাচনী প্রচারণার কাজ। এই নির্বাচনী প্রচারণার সময় কোনো মন্ত্রী কোনো ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবে না আর কোনো রকম সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করতে পারবে না, এটাই নিয়ম।

“কিন্তু সরকার থেমে থাকবে না, সরকারি দৈনন্দিন যে কাজগুলো, রুটিন ওয়ার্ক যাকে বলে, সেটা কিন্তু করতে হবে। নইলেতো স্থবির হয়ে যাবে, দেশতো চলবে না।”

তিনি বলেন, “কাজে এখন ওই নির্বাচনকালীন সরকার কে হবে, সেদিকে আমরা আর যাচ্ছি না। আমরা যেভাবে চলার ওইভাবেই… অন্যান্য দেশ, আমি এটা ইংল্যান্ডেও আলাপ করেছি, তাদেরও, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা… অর্থাৎ যেসব দেশের সংসদীয় গণতন্ত্র আছে, সেভাবে যারা চলে সেইভাবেই করা হবে।”

সরকারের আকার কী রকম হবে, সে বিষয়ে কোনো ঘোষণা না দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আকার ছোট করলে যেটা সমস্যা হয়, ওইটা ১৪-তে দেখেছি, অনেক মন্ত্রণালয়ের কাজ আর হয় না, কাজগুলি যাতে বাধাগ্রস্ত হয়ে যায়।

“কাজগুলি যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, আমাদের উন্নয়নের ধারাটা যাতে অব্যাহত থাকে, আমাদের সেটাই প্রচেষ্টা। সেজন্য বলছি, যেভাবে আছে সেভাবে।”

২০১৮ সালের মতো এবারও নিজের জন্য পৃথক কার্যালয়ের ব্যবস্থা করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি নিজেও যখন প্রার্থী হব, তখন এখানে বসে ভিডিও কনফারেন্সিং করব না। আমি আমার অফিস আলাদা, যেমন গতবারও করেছিলাম ৫ নম্বরে, এবার আলাদা একটা অফিসের ব্যবস্থা করেছি।”