শিশুদের জন্য ড্রাগন ফল: স্বাস্থ্য ও অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা
শিশুদের জন্য ড্রাগন ফলের উপকারিতা: পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও বাজার বাস্তবতায় যাচাইভিত্তিক বিশ্লেষণ।
বান্দরবান প্রতিনিধি: বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ‘ড্রাগন ফল’—দেখতে আকর্ষণীয়, স্বাদে হালকা মিষ্টি ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফলটি বিশেষ করে পার্বত্য অঞ্চলে শিশুদের জন্য উপকারী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির বিভিন্ন এলাকায় এখন এর বাণিজ্যিক চাষ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
স্থানীয় বাজারে ড্রাগন ফলের দাম কেজি প্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত, যদিও কিছু রিপোর্টে ১৫০–১৮০ টাকা পর্যন্ত বলা হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাহাড়ি অঞ্চলের আবহাওয়া ড্রাগন ফল চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় উৎপাদন ও সরবরাহ উভয়ই বেড়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখন চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও ঢাকায়ও এই ফল সরবরাহ করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মত
ড্রাগন ফলের উপকারিতা নিয়ে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসাইটগুলো যেমন Healthline, WebMD এবং Solid Starts জানিয়েছে, এতে ভিটামিন সি, এ, বি, ফোলেট, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে—যা শিশুদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
প্রধান উপকারিতা- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে।
হজমে সহায়ক: উচ্চ ফাইবারের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।
হাড়ের বিকাশ: ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম হাড় ও দাঁত মজবুত করে।
রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ: আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়তা করে।
দৃষ্টি ও ত্বক স্বাস্থ্য: ভিটামিন এ দৃষ্টি শক্তি বাড়ায়, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে আর্দ্র রাখে।
শিশুদের জন্য নিরাপদ বয়স
বিশেষজ্ঞরা জানান, ৬ মাস বয়সের পর শিশুকে ড্রাগন ফল দেওয়া যেতে পারে, তবে অল্প পরিমাণে শুরু করা উচিত এবং শিশুর অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
সতর্কতা
অতিরিক্ত খেলে পেট ফাঁপা বা হজমে সমস্যা হতে পারে।
ড্রাগন ফল খাওয়ার পর মল বা প্রস্রাবের রং লালচে হতে পারে—এটি স্বাভাবিক।
ডায়াবেটিস আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ জরুরি।
স্থানীয় বিশেষজ্ঞের মন্তব্য যাচাই
অনেক ডাক্তার ডেঙ্গু নির্ণয়ে ড্রাগন ফলের ভূমিকা সম্পর্কিত মন্তব্য বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়। তবে মাল্টি ভিটামিনের কারনে উপকার হওয়া যুক্তিযুক্ত।
অর্থনৈতিক প্রভাব
বান্দরবানে বর্তমানে ৪০টিরও বেশি বাগানে ড্রাগন ফল চাষ হচ্ছে, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। কৃষকরা জানাচ্ছেন, একবার গাছ লাগালে ৫ থেকে ৬ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়, ফলে এটি একটি টেকসই আয়ের উৎসে পরিণত হয়েছে।
ড্রাগন ফল শিশুদের পুষ্টি ও স্বাস্থ্যরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এর ভিটামিন, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও হজমে সহায়তা করে। তবে ডেঙ্গু নির্ণয় সম্পর্কিত দাবি বৈজ্ঞানিকভাবে যাচাই হয়নি। নতুন খাবার হিসেবে শিশুদের ড্রাগন ফল খাওয়ানোর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।
সূত্র: Healthline, WebMD, Solid Starts, স্থানীয় কৃষি বিভাগ, বান্দরবান বাজার সমীক্ষা, স্বাধীন অনুসন্ধান
প্রতিবেদন: অসীম রায় | TweetNews24.com