ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ রূপরেখা ছাড়াই শুরু
টুইট ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস নিহত ইসরায়েলি জিম্মিদের আরও কয়েকজনের মরদেহ ফেরত দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ায় এখন অস্ত্রবিরতি চুক্তির ‘দ্বিতীয় ধাপে’ যাওয়ার সময় এসেছে। তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ট্রাম্প নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, ‘২০ জন জিম্মির সবাই এখন ফিরে এসেছে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী ভালোই আছে। বড় এক বোঝা কাঁধ থেকে নেমেছে; কিন্তু কাজ এখনো শেষ হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেভাবে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, মৃতদের মরদেহ এখনো ফেরত আসেনি। এখনই শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় ধাপ।’ মঙ্গলবার ইসরায়েল ও মিশর সফর শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার কয়েক ঘণ্টার পরই ট্রাম্প এ পোস্ট শেয়ার করেন।
এদিকে, গতকাল বুধবার হামাস চার জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে। যদিও এদিন ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে হামাস যে চারটি মরদেহ হস্তান্তর করেছে, তার মধ্যে একটি মরদেহের ডিএনএ কোনো জিম্মির নমুনার সঙ্গে মেলেনি। এর আগে গত মঙ্গলবার আরও চারটি মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছিল।
এর আগে, গাজায় কার্যকর হওয়া ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি পরীক্ষার মুখে পড়ে। ইসরায়েল জানিয়েছিল, হামাস জিম্মিদের মরদেহ ফেরাতে বিলম্ব করায় গাজায় ত্রাণপ্রবাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে এবং মিশরের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংও পরিকল্পনা মতো খোলা হবে না। তবে মরদেহ হস্তান্তরের পর অবশ্য গাজায় পুরোদমে ত্রাণ প্রবেশ শুরু হয়। গাজায় ত্রাণ প্রবেশে ইসরায়েলের জারি করা বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে।
তার আগে, ইসরায়েল ও মিশর সফরের সময় ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ‘নতুন মধ্যপ্রাচ্যের ঐতিহাসিক ভোরের সূচনা হয়েছে।’ এ সময় তিনি ও আঞ্চলিক নেতারা গাজায় যুদ্ধবিরতি স্থায়ী করার লক্ষ্যে একটি ঘোষণা স্বাক্ষর করেন। চুক্তির আওতায় জীবিত ২০ বন্দিকে ট্রাম্প ইসরায়েলে পৌঁছানোর ঠিক আগেই মুক্তি দেওয়া হয়।
তবে সোমবার হামাস চারটি মরদেহ ফেরত দিলেও তারা এখনো ২৪ জন বন্দির মরদেহ নিজেদের হেফাজতে রেখেছে, যা অস্ত্রবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী পরবর্তী সময় ফেরত দেওয়া হবে। অন্যদিকে, গাজার একটি হাসপাতাল জানিয়েছে, তারা ৪৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ গ্রহণ করেছে, যা যুদ্ধ শেষের চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েল ফেরত দিয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের পর হামাসকে নিরস্ত্রীকরণে বাধ্য করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদি হামাস নিজেরা অস্ত্র সমর্পণ না করে তবে যুক্তরাষ্ট্র ও প্রাসঙ্গিক পক্ষ তাদের নিরস্ত্র করাবে বলে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, হামাস অস্ত্র সমর্পণ করবে। কারণ তারা বলেছে, যে করবে। আর যদি না করে, আমরা তাদের অস্ত্রমুক্ত করব। এটি দ্রুত এবং সম্ভবত কঠোরভাবে ঘটবে। তবে অস্ত্রসমর্পণে কারা জড়িত থাকবেন বা এতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা থাকবে কি না এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প।