মাংস নির্ভর লো-কার্ব ডায়েটে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা

টুইট ডেস্ক : নতুন এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, উদ্ভিদ-ভিত্তিক ডায়েটের তুলনায় মাংস-ভিত্তিক লো কার্ব ডায়েটে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা বেশি। পাঁচ ধরনের লো-কার্ব ডায়েট নিয়ে নতুন গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া গেছে।

সিএনএনের একটি প্রতিবেদনে এই বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন গবেষক দলের সদস্য ও হার্ভার্ড টিএইচ চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ডক্টর কিউই সান।

কিউই সান বলেন, ‘অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি এড়াতে শস্য, স্বাস্থ্যকর নন-ট্রপিক্যাল উদ্ভিজ্জ তেল ও উদ্ভিদ প্রোটিন কার্বোহাইড্রেটের চেয়ে কার্যকরী।’

গবেষণায় কম কার্বোহাইড্রেট খাদ্য হিসেবে প্রানিজ প্রোটিন ও চর্বি ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিন ও চর্বির একটি সাদৃশ্য তুলনা করা হয়েছে।

সাধারণ ডায়েটগুলো দৈনিক ক্যালোরির প্রায় ৩৮ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কার্বোহাইড্রেটকে কমিয়ে দেয়। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যারা প্রানিজ প্রোটিন ও চর্বিযুক্ত অস্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট খেয়েছেন তাদের ওজন দীর্ঘমেয়াদে বেড়েছে।

অপরদিকে যারা বেশি পরিমাণে ফল, পূর্ণ শস্য, স্টার্চহীন শাকসবজি, দুগ্ধজাত খাবার, লাল ও প্রক্রিয়াজাত মাংস ও মিষ্টি পানীয়, মিষ্টি ও ডেজার্টে চিনি কম গ্রহণ করেছেন তাদের দীর্ঘমেয়াদে ওজন বাড়ার কোনো প্রভাব দেখা যায়নি।

হার্ভার্ড টিএইচ চ্যান স্কুলের নিউট্রিশন বিভাগের গবেষণা সহকারি ও লেখক বিঙ্কাই লিউ এক ইমেইল বার্তায় বলেন, প্রাথমিকভাবে গবেষণায় দেখা গেছে, অস্বাস্থ্যকর লো-কার্ব ডায়েট গ্রহণকারীদের চার বছরে গড়ে প্রায় ২.৩ কেজি বা ৫.১ পাউন্ড ওজন বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাস্থ্যকর লো-কার্ব ডায়েট গ্রহণকারীদের ওজন ছিল গড়ে প্রায় ২.২ কেজি বা ৪.৯ পাউন্ড।

হার্ভার্ড টিএইচ চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথের নিউট্রিশন বায়োমার্কার ল্যাবরেটরির পরিচালক সান বলেছেন, ‘যদিও এই গবেষণায় কম কার্ব খাওয়ার উপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে তবে যে কোনও খাদ্যের ক্ষেত্রে খাদ্যের মান গুরুত্বপূর্ণ ।

তাজা ফল, নন-স্টার্চ সবজি, পূর্ণ শস্য, বাদাম, ডাল, জলপাই তেল, অন্যান্য উদ্ভিজ্জ তেল, কফি, চা বা শুধু পানি, পরিমিত রেড ওয়াইন, কম সোডিয়ামযুক্ত খাবার ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর উপাদানের ওপর জোর দেয়া সবসময়ই বুদ্ধিমানের কাজ।’

অলাভজনক ট্রু হেলথ ইনিশিয়েটিভের প্রতিষ্ঠাতা ওষুধ বিশেষজ্ঞ ডেভিড কাটজ বিভিন্ন লো-কার্ব ভেরিয়েন্টের দীর্ঘস্থায়ী ওজন হ্রাসের ওপর প্রভাব নিয়ে গবেষণা করার বিষয়টিকে একটি অভিনব উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন। তার মতে গবেষণাটি অবশ্যই পর্যবেক্ষণমূলক।

জেএএমএ নেটওয়ার্ক ওপেন জার্নালে বুধবার প্রকাশিত গবেষণায় ৬৭ হাজারের বেশি লোকের ডেটা নিয়ে গবেষণা করা হয়। তারা তিনটি আলাদা দীর্ঘমেয়াদি গবেষণায় অংশ নেন।

তিনটি গবেষণায় অংশগ্রহণকারী সবাই সুস্থ ছিলেন। তারা ৬৫ বছরের কম বয়সী ছিলেন। তাদের আগে কোনো দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার ইতিহাস ছিল না। তারা সবাই চার বছরের ব্যবধানে তাদের ওজন হ্রাস বা বৃদ্ধির তথ্য নিজ ইচ্ছায় জানিয়েছেন।