লন্ডনে কক্সবাজারবাসীদের পিঠা উৎসব

কক্সবাজার অ্যাসোসিয়েশন যুক্তরাজ্যের পিঠা উৎসব ও বার্ষিক সাধারণ সভা: প্রবাসীদের ঐক্য ও ঐতিহ্যের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

শহিদুল ইসলাম: যুক্তরাজ্যে বসবাসরত কক্সবাজারবাসীদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন দৃঢ় করার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার অ্যাসোসিয়েশন যুক্তরাজ্য (Cox’s Bazar Association UK) আয়োজন করেছে একদিনব্যাপী পিঠা উৎসব ও বার্ষিক সাধারণ সভা।

অনুষ্ঠানটি ১২ অক্টোবর, রবিবার, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের বার্নি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়।

লন্ডনের এই উৎসব শুধুমাত্র একটি খাদ্য উৎসব ছিল না; বরং এটি প্রবাসী কক্সবাজারবাসীদের শিকড়, স্মৃতি ও ঐতিহ্যের পুনর্মিলন ঘটিয়েছে। দেশের বিভিন্ন শহর থেকে শতাধিক প্রবাসী এতে অংশ নেন, যা অনুষ্ঠানটিকে প্রবাসী ঐক্যের এক অনন্য দৃষ্টান্তে পরিণত করে।

পিঠা উৎসব: কক্সবাজারের স্বাদে ভরে ওঠে লন্ডন

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে আয়োজিত পিঠা উৎসবটি যেন কক্সবাজারের গ্রামীণ জীবনের স্বাদ ও স্মৃতি ফিরিয়ে আনে। অংশগ্রহণকারীরা বলেন, “এখানে এসে মনে হয়েছে আমরা যেন কক্সবাজারের সমুদ্রতীরের বিকেল কাটাচ্ছি—গুড়, নারকেল ও তালের ঘ্রাণে মেতে উঠেছে চারপাশ।”

অনুষ্ঠানে পরিবেশিত ঐতিহ্যবাহী পিঠাগুলোর মধ্যে ছিল গুরা ও সাচের পিঠা, তালের পিঠা, দুধচিতল, পুলি, আতিক্যা, বড়া পিঠা, নাড়ু, চটপটি, এবং সবার প্রিয় ভাপা পুলি। এসব পিঠা ঘরোয়া পরিবেশে প্রবাসী মহিলারা নিজের হাতে তৈরি করেন।

পিঠা পর্ব শেষে পরিবেশিত হয় ঘরোয়া রান্না—ভাত, ভর্তা, মাছের ঝোল ও সবজি—যা কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী খাবারের প্রতিফলন ঘটায়।

বার্ষিক সাধারণ সভা: নতুন নেতৃত্বে ঐক্যের আহ্বান

উৎসবের দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভায় ঘোষণা করা হয় নবগঠিত এক্সিকিউটিভ কমিটি।

নবনির্বাচিত কমিটি:

সভাপতি: ফরিদুল আলম।

সাধারণ সম্পাদক: মোহাম্মাদ গিয়াস উদ্দিন।

উভয়েই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং পুনর্নির্বাচিত নেতা। এছাড়া ড. মোহাম্মাদ শফিউল্লাহ নতুন স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি সোহেল রানা শামিম, সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ বিন আজাদ, ব্যারিস্টার নুরুল গাফফার, ফরিদ তৈয়ব, এবং মোহাম্মদ আজাদসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।

ঐক্য, সংস্কৃতি ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা

স্টিয়ারিং কমিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. সাহেদ চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন,

“এই অ্যাসোসিয়েশন শুধু একটি সংগঠন নয়, এটি আমাদের পরিচয়ের অংশ। ঐক্যবদ্ধ থেকে আমরা কক্সবাজারের সংস্কৃতিকে আরও বড় পরিসরে তুলে ধরব।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রবাসীরা বলেন, এ ধরনের আয়োজন তাদের পারস্পরিক বন্ধনকে দৃঢ় করে এবং প্রবাসজীবনের মানসিক ক্লান্তি দূর করে।

লন্ডনের এই উৎসব প্রমাণ করেছে—দেশ থেকে হাজার মাইল দূরে থেকেও প্রবাসীরা তাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও শিকড়কে কতটা লালন করেন। ভবিষ্যতে কক্সবাজার অ্যাসোসিয়েশন যুক্তরাজ্য আরও বৃহৎ পরিসরে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে।