ভারতের হিমাচল প্রদেশে ভূমিধস: বাসে আঘাত, ১৫ জনের প্রাণহানি

হিমাচল প্রদেশে ভূমিধসের ধ্বংসাবশেষে বাসে আঘাত: কমপক্ষে ১৫ জন নিহত।
বিশ্ব ডেস্ক: ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য হিমাচল প্রদেশের বিলাসপুর জেলার কাছে একটি পাহাড়ি রাস্তায় ভূমিধসের ধ্বংসাবশেষ একটি যাত্রীবাহী বাসে আঘাত হানার ফলে কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাতে জানা গেছে, বাসটিতে তখন প্রায় ২০–২৫ জন যাত্রী ছিলেন।
প্রবল বর্ষণের কারণে পাহাড়ি ঢাল অস্থির হয়ে পড়ায় বৃহস্পতিবার রাতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ধ্বংসাবশেষের আঘাতে বাসটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে।
হিমাচল প্রদেশের এই অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে ভূমিধসের ঝুঁকিপূর্ণ। সোমবার থেকে চলমান প্রবল বৃষ্টিপাত পাহাড়ি ঢালগুলোকে আরও অস্থির করে তুলেছিল। মঙ্গলবার রাতের দিকে ভূমিধস ঘটার সময় বাসটি চলছিল। ধ্বংসাবশেষ এতটাই ব্যাপক ছিল যে রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
হতাহত ও নিহতদের বিবরণ
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের মধ্যে ৯ জন পুরুষ, ৪ জন মহিলা এবং ২ শিশু অন্তর্ভুক্ত। তিনজন আহত শিশুকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য অন্তর্ভুক্ত যাত্রীদের খোঁজ চলছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সতর্ক করেছেন, মৃত্যু সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
উদ্ধার অভিযান
জাতীয় বিপদ ব্যবস্থাপনা বাহিনী (এনডিআরএফ) ধ্বংসাবশেষের মধ্যে বেঁচে থাকা যাত্রীদের খুঁজছে। উদ্ধারকারীরা ধুলোমাখা জিনিসপত্র সরিয়ে ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে মৃত ও জীবিতদের খুঁজছেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ রাস্তা পরিষ্কার করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুকহুর বলেন, “এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আমরা আহতদের দ্রুত চিকিৎসা দিচ্ছি এবং বাকি যাত্রীদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।” রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শোক প্রকাশ করেছেন।
ভারতের এই বছরের চরম বর্ষণ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বন্যা ও ভূমিধস সৃষ্টি করেছে। অবকাঠামোগত দুর্বলতা, পাহাড়ি অঞ্চলের অস্থিতিশীল ভূমি এবং জলবায়ু পরিবর্তন এই ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষিণ এশিয়ার মনসুন এখন অপ্রত্যাশিতভাবে তীব্র হচ্ছে, যা অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও বন্যার ঝুঁকি তৈরি করছে।
এই ঘটনা হিমাচল প্রদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে।






