ইউরোপজুড়ে গাজা হামলার প্রতিবাদে উত্তাল জনতা

বার্সেলোনায় প্রো-প্যালেস্টাইন বিক্ষোভে ৮ জন গ্রেপ্তার, ইউরোপজুড়ে উত্তাল প্রতিবাদ — গাজায় অনাহারে আরও এক মৃত্যু।
বিশ্ব ডেস্ক: ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউরোপজুড়ে নতুন করে জ্বলে উঠেছে প্রো-প্যালেস্টাইন আন্দোলন। শনিবার (৪ অক্টোবর) স্পেনের বার্সেলোনায় অনুষ্ঠিত এক বিশাল বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ২০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
বার্সেলোনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি
স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৭০,০০০ মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নেন। মূলত শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলেও পরে একদল বিক্ষোভকারী ইসরায়েল-সম্পর্কিত দোকান ও ব্র্যান্ড যেমন জারা ও স্টারবাকসের শোরুমে ভাঙচুর চালায়। পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই বিক্ষোভটি মূলত গাজামুখী “গ্লোবাল সুমুদ ফ্লটিলা”-র ওপর ইসরায়েলি নৌবাহিনীর হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত হয়। ফ্লটিলাটি বার্সেলোনা থেকেই গাজায় মানবিক সহায়তা নিয়ে রওনা দিয়েছিল, কিন্তু ইসরায়েলি নৌবাহিনী তা বাধা দেয়। এই ঘটনাই ইউরোপে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়।
ইউরোপজুড়ে প্রতিবাদ
একই দিনে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদ, ইতালির রোম, ও পর্তুগালের লিসবন শহরেও হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। বিভিন্ন শহরে সংঘর্ষে অন্তত ৪০০ জনের বেশি গ্রেপ্তার হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। লন্ডন, প্যারিস ও বার্লিনেও একাত্মতা প্রকাশের বিক্ষোভ হয়েছে, যেখানে demonstrators “Stop the Genocide in Gaza” এবং “Free Palestine Now” স্লোগান দেন।
গাজায় মানবিক বিপর্যয় আরও ঘনীভূত
একই সময়ে গাজায় ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যমতে, মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭,১৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬৫ জন নিহত এবং ১৫৩ জন আহত হয়েছেন।
এছাড়া, তীব্র খাদ্যসংকটে অনাহারে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে, যার ফলে গাজায় অনাহারে মৃতের সংখ্যা ৪৬০ জনে পৌঁছেছে, এর মধ্যে ১৫৪ শিশু রয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইউরোপের বিক্ষোভগুলোর প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে বলেছে, এটি “মানবিক ন্যায়বিচারের আহ্বান।”
অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সদস্য কয়েকটি দেশ ইসরায়েলকে “তাৎক্ষণিক মানবিক করিডর” খুলতে এবং নিরীহ নাগরিকদের রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছে।
বার্সেলোনার এই বিক্ষোভ দেখিয়েছে, গাজার যুদ্ধ এখন শুধু মধ্যপ্রাচ্যের নয়, বরং ইউরোপজুড়ে একটি মানবিক বিবেকের আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। গাজার মাটিতে রক্তপাত ও অনাহার চলতে থাকায় বিশ্বজুড়ে “প্যালেস্টাইন ন্যায়বিচার আন্দোলন” আরও জোরালো হচ্ছে।







