ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ইসলামী ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের অবরোধ
ইসলামী ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের বিক্ষোভ
টু্ইট ডেস্ক: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন ইসলামী ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা। শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে এগারোটা থেকে তারা মহাসড়কের উভয় লেনে অবস্থান নিয়ে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন।
এতে মহাসড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে চট্টগ্রাম ও ঢাকামুখী রুটে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে দুপুর পৌনে ১টার দিকে অবরোধ স্থগিত করা হলে যান চলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছান থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা। প্রায় ১২০০ চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে তাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। এই অবরোধের কারণে মহাসড়কের চট্টগ্রাম ও ঢাকামুখী উভয় লেনে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, যা হাজার হাজার যাত্রী ও চালকদের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে শহরমুখী যাত্রীরা তীব্র গরম ও দীর্ঘ অপেক্ষার কারণে বেকায়দায় পড়েন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ফৌজদারহাটে মহাসড়কের মাঝখানে কয়েকশ কর্মকর্তা অবস্থান নেওয়ায় যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণরূপে স্থবির হয়ে পড়ে। চট্টগ্রামমুখী ও ঢাকামুখী লেনে শত শত গাড়ি আটকে থাকতে দেখা যায়। তীব্র গরমে যাত্রীরা দীর্ঘ সময় গাড়িতে আটকে থাকায় অনেকেই হাঁফিয়ে ওঠেন। এই অবরোধের কারণে বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কারসহ সব ধরনের যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়।
বাসযাত্রী মো. সোহেল জানান, “আমি আমার মায়ের চিকিৎসার জন্য শহরে যাচ্ছিলাম। কিন্তু পথিমধ্যে এই অবরোধের কারণে আটকে গেলাম। আজকে ডাক্তারের কাছে পৌঁছাতে পারব কিনা জানি না।”
অপর এক যাত্রী হাসানুল আলম বলেন, “আমি আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসে যাচ্ছিলাম। কিন্তু অবরোধের কারণে পথে আটকে গেলাম। তীব্র গরমে অনেকেই কষ্ট পাচ্ছেন।” তিনি আরও জানান, দীর্ঘ সময় আটকে থাকার কারণে অনেক যাত্রী হতাশা প্রকাশ করেছেন।
সীতাকুণ্ডের বারআওলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল মোমিন জানান, “চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা সকাল ১১টার দিকে মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। পরে আলোচনার মাধ্যমে দুপুর পৌনে ১টার দিকে তারা অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।” তিনি আরও জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ মোতায়েন ছিল এবং পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা হয়েছে।
ইসলামী ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের ব্যাংক থেকে অযৌক্তিকভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তারা দাবি করেন, তাদের পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এই অবরোধ তাদের দাবি আদায়ের একটি অংশ বলে তারা জানান।
এই অবরোধের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফৌজদারহাট এলাকায় প্রায় দেড় ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে শত শত যাত্রী ও চালক দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থাকেন। বিশেষ করে জরুরি প্রয়োজনে যারা শহরে যাচ্ছিলেন, তারা চরম দুর্ভোগের শিকার হন। অবরোধ স্থগিত হওয়ার পর ধীরে ধীরে যানজট নিরসন হয় এবং মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।