বাংলাদেশে ই-ট্যাক্স টোকেন চালু: ডিজিটাল রোড ট্যাক্স সুবিধা

বাংলাদেশে রোড ট্যাক্সের নতুন ডিজিটাল সুবিধা! কিউআর কোড সম্বলিত ই-ট্যাক্স টোকেন ব্যবহার করে যান চালনা করা যাবে। দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছ।

টুইট ডেস্ক: বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) রোড ট্যাক্স পরিশোধকারীদের জন্য কিউআর কোড সম্বলিত ই-ট্যাক্স টোকেন চালু করেছে। এবার থেকে রোড ট্যাক্স পরিশোধের পর গাড়ির মালিক বা চালক মুদ্রিত বা মোবাইল ফোনে প্রদর্শনযোগ্য টোকেন ব্যবহার করে যান চালনা করতে পারবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ট্যাক্স যাচাই প্রক্রিয়া সহজ, স্বচ্ছ এবং দ্রুত হয়েছে।

বিআরটিএ-এর সহকারী সচিব মো. জসিম উদ্দিন রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন। এতে বলা হয়েছে, রোড ট্যাক্স পরিশোধের পর কিউআর কোডযুক্ত ই-ট্যাক্স টোকেন ইস্যু করা হবে, যা ঐতিহ্যগত মুদ্রিত টোকেনের সমতুল্য। চালকরা চাইলে এটি প্রিন্ট করে রাখতে পারেন বা স্মার্টফোনে প্রদর্শন করতে পারবেন।

বাংলাদেশে সকল নিবন্ধিত যানবাহনের জন্য বার্ষিক রোড ট্যাক্স পরিশোধ বাধ্যতামূলক, এবং নতুন এই ব্যবস্থা ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের অংশ হিসেবে কাগজপত্রের জট কমিয়ে সাধারণ জনগণ ও পরিবহন মালিকদের সুবিধা বাড়াবে। টোকেন ইস্যু করা যাবে বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টাল (BSP) এর মাধ্যমে, যেখানে অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবহারের মাধ্যমে ট্যাক্স পরিশোধ এবং টোকেন ডাউনলোড সম্ভব।

ই-ট্যাক্স টোকেনে অন্তর্ভুক্ত কিউআর কোড ব্যবহার করে টোকেনের বৈধতা বিআরটিএ-এর পোর্টাল বা মোবাইল অ্যাপ থেকে যাচাই করা যায়। টোকেনে ট্যাক্স পরিশোধের তারিখ, মেয়াদ এবং অন্যান্য তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকে। চালকরা এটি মুদ্রিত করে রাখার পাশাপাশি মোবাইল ফোনে দেখাতে পারেন, যা পুলিশ বা কর্তৃপক্ষের যাচাই প্রক্রিয়া সহজ করবে।

বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টালে কিউআর স্ক্যানারের সুবিধা রয়েছে, যেখানে টোকেনের পিডিএফ বা ইমেজ আপলোড করে যাচাই করা যায়। এছাড়া, গুগল প্লে স্টোরে উপলব্ধ ‘BRTA DNP & DRC Checker’ অ্যাপ ব্যবহার করে ই-টোকেনের সঙ্গে ই-রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট (ই-আরসি) ডাউনলোড ও যাচাই করা সম্ভব।

ই-ট্যাক্স টোকেনের মূল সুবিধা হলো কাগজপত্র হারানোর ঝামেলা কমানো, স্বয়ংক্রিয় ও দ্রুত যাচাই ব্যবস্থা, যা দুর্নীতি কমাতে সাহায্য করবে। এছাড়া, অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে ট্যাক্স ক্যালকুলেটর ও পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে ঘরে বসে টোকেন নবায়ন করা যায়। তবে চ্যালেঞ্জও রয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট সীমিত হওয়ায় অনেকে এখনও মুদ্রিত সনদের উপর নির্ভর করতে পারেন। এছাড়া, ডিজিটাল সাক্ষরতা এবং সাইবার নিরাপত্তা বৃদ্ধিও প্রয়োজন।

ই-ট্যাক্স টোকেন চালু হওয়ায় বাংলাদেশের পরিবহন খাতে ডিজিটালাইজেশনের নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। এটি যান মালিকদের জন্য সুবিধাজনক হলেও, গ্রামীণ এলাকায় সচেতনতা কর্মসূচি এবং সাপোর্ট সেন্টার স্থাপন জরুরি। যান মালিকদের উচিত দ্রুত বিআরটিএ পোর্টালে রেজিস্ট্রেশন করে এই সুবিধা গ্রহণ করা, যাতে যান চালনা নিরাপদ ও আইনসম্মত হয়।