লাদাখে আন্দোলন: সহিংসতা ও উত্তেজনা অব্যাহত

টুইট প্রতিবেদক: লাদাখের রাজ্য মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন ২৪ সেপ্টেম্বর সহিংস আকার নেয়। জেন-জি প্রজন্মের নেতৃত্বে লেহে বিক্ষোভকারীরা বিজেপি অফিস ও পুলিশ যানবাহন জ্বালিয়ে দেয়। পুলিশ গুলিতে চারজন নিহত এবং ৮০-এর বেশি আহত হয়।

আন্দোলনের মুখপাত্র সোনাম ওয়াংচুককে জাতীয় নিরাপত্তা আইন (NSA) অনুযায়ী গ্রেফতার করা হয়েছে, যা নতুন উত্তেজনা তৈরি করেছে।

২৪ সেপ্টেম্বর লেহে ৫,০০০-এর বেশি বিক্ষোভকারী বিজেপি অফিস ও পুলিশ যানবাহন পোড়ায়। পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও লাঠিচার্জের পর গুলি চালায়। নিহত চারজনের মধ্যে একজন কার্গিল যুদ্ধের ভেটেরান। আহতদের মধ্যে ৩২ জন নিরাপত্তাকর্মী। লেহে কারফিউ জারি হয় এবং মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ থাকে।

২৫ সেপ্টেম্বর ৫০ জন গ্রেফতার হন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুই দিন বন্ধ থাকে। ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কারফিউ আংশিকভাবে কার্যকর।

ওয়াংচুককে ২৬ সেপ্টেম্বর জোধপুর জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সরকার তাঁকে ‘উস্কানিমূলক বক্তৃতা’ এবং নেপালের জেন-জি বিক্ষোভ ও আরব স্প্রিং উল্লেখের জন্য দায়ী করেছে। তাঁর এনজিও SECMOL-এর FCRA লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। সমর্থকরা এটিকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে উল্লেখ করেছেন।

লাদাখ ২০১৯ সালে জম্মু-কাশ্মীর থেকে আলাদা করা হয়। স্থানীয়রা রাজ্য মর্যাদা, ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে আদিবাসী সুরক্ষা, স্থানীয় চাকরি ও ভূমির অধিকার দাবি করছে। Leh Apex Body (LAB) ও Kargil Democratic Alliance (KDA) আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে। সরকার ৬ অক্টোবর আলোচনার ঘোষণা দিয়েছে, তবে স্থানীয়রা এটিকে একতরফা বলে সমালোচনা করছে। জেন-জি প্রজন্মের ক্ষোভের মূল কারণ হলো বেকারত্ব, অর্থনৈতিক সংকট এবং সীমান্ত এলাকা সত্ত্বেও উন্নয়নের অভাব।

স্থানীয় ও রাজনৈতিকভাবে জম্মু-কাশ্মীর মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা লাদাখকে ‘প্রতারিত’ বলেছেন। কংগ্রেস ও CPI(M) সহিংসতাকে ‘দমনমূলক’ বলে উল্লেখ করেছে। বিজেপি কংগ্রেসকে দোষারোপ করেছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও আল জাজিরা সহিংসতাকে ‘যুবকদের হতাশার প্রকাশ’ বলে উল্লেখ করেছে। এটি ভারত-চীন সীমান্তের স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এক্স-এ #LadakhProtests ও #FreeSonamWangchuk ট্রেন্ড করছে। সমর্থকরা বিতর্কিত মন্তব্য করে বলেছেন, “অ্যাকটিভিজম না অ্যানার্কি?” নেপালের আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা চলছে। লাদাখে উত্তেজনা ভারতের হিমালয়ান অঞ্চলের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

৬ অক্টোবরের সরকারী আলোচনার পরই ভবিষ্যতের দিশা নির্ধারিত হবে।

সূত্র: আল জাজিরা, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, নিউ ইয়র্ক টাইমস, রয়টার্স, বিবিসি, ইন্ডিয়া টুডে, দ্য হিন্দু, এক্স পোস্টস।