ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও ফ্রান্স রাশিয়ান এলএনজির শীর্ষ ক্রেতা
- ফ্রান্স রাশিয়ান এলএনজি আমদানিতে ইউরোপের শীর্ষস্থানীয়, ২০২৫-এ ৪ মিলিয়ন টন আমদানি।
- ২০২২-এর পূর্ববর্তী মাত্রার চেয়ে ৬৭% বৃদ্ধি, ২০২৪-এ খরচ ২.৬৮ বিলিয়ন ইউরো।
বিশ্ব ডেস্ক: ফ্রান্স ইউরোপের শীর্ষ রাশিয়ান তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ক্রেতা হিসেবে স্থান ধরে রেখেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ফ্রান্স প্রায় ৪ মিলিয়ন টন রাশিয়ান এলএনজি আমদানি করেছে।
২০২২ সালের পূর্ববর্তী মাত্রার তুলনায় ৬৭% বৃদ্ধি। এই বৃদ্ধি ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইউরোপের শক্তি সংকটের প্রেক্ষাপটে উল্লেখযোগ্য, যদিও ইইউ রাশিয়ান এনার্জির উপর নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করছে।
রয়টার্সের তথ্য অনুসারে, রাশিয়ার মোট এলএনজি রপ্তানি জানুয়ারি-আগস্ট ২০২৫-এ ১৮.৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন পৌঁছেছে, যার মধ্যে এশিয়ায় ৯.৫ মিলিয়ন টন এবং ইউরোপে ৯.২ মিলিয়ন টন। ফ্রান্স এই ইউরোপীয় অংশের সবচেয়ে বড় ক্রেতা, যা ইইউ-এর মোট রাশিয়ান এলএনজি আমদানির ১৪% নিয়ন্ত্রণ করে। ফ্রান্সের টোটাল এনার্জিজ কোম্পানির ইয়ামাল এলএনজি প্রকল্পে ২০% শেয়ার রয়েছে, যা বছরে ৪ মিলিয়ন টন এলএনজি সরবরাহ করে।
২০২৪ সালে ফ্রান্সের রাশিয়ান এলএনজি আমদানির খরচ ছিল ২.৬৮ বিলিয়ন ইউরো, যা ইইউ-এর মোট রাশিয়ান এলএনজি খরচের (প্রায় ৭ বিলিয়ন ইউরো) একটি বড় অংশ। এই খরচ যুদ্ধের পর দাম বৃদ্ধির কারণে ২০২১ সালের তুলনায় প্রায় ৩০০% বেড়েছে। ফ্রান্সের মনটোয়ার-ডি-ব্রেটাগ্ন এবং ডুনকির্ক টার্মিনালগুলো রাশিয়ান এলএনজির প্রধান প্রবেশদ্বার, যা অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে (যেমন: জার্মানি, স্পেন) পুনর্বিতরণ করা হয়।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “যারা সাধারণ বুদ্ধি রাখেন, তারা জানেন ইউরোপ রাশিয়া ছাড়া টিকতে পারবে না।” এই দাবি ইউরোপের শক্তি নির্ভরতা তুলে ধরে, কিন্তু তথ্য অন্য কথা বলে। ইইউ-এর রাশিয়ান গ্যাস আমদানি ২০২১ সালের ৪৫% থেকে ২০২৪ সালে ১৯%-এ নেমেছে। ২০২৪ সালে ইউরোপ ১৭.৮ মিলিয়ন টন রাশিয়ান এলএনজি আমদানি করেছে, যা পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে ১৮% বেশি, কিন্তু মোট গ্যাস চাহিদা ১৯% কমেছে।
ইইউ ২০২৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে রাশিয়ান এলএনজি আমদানি নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা করেছে, যা মস্কোর বিরুদ্ধে ১৯তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজের অংশ। এই নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্পের চাপে এক বছর আগে এগিয়ে আনা হয়েছে। তবে, ফ্রান্সের মতো দেশের দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির কারণে (২০৩২ পর্যন্ত) আমদানি অব্যাহত রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নির্ভরতা ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইউরোপের শক্তি নিরাপত্তাকে চ্যালেঞ্জ করছে, যদিও ইইউ নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে এবং গ্যাস চাহিদা কমাচ্ছে।