ইংল্যান্ডে ইসলামের প্রভাব নিয়ে গুজব: তথ্য বলছে ভিন্ন কথা

মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু “দখল” দাবি অতিরঞ্জিত

বিশ্ব ডেস্ক: ইংল্যান্ডে ইসলাম ধীরে ধীরে দেশটির সংস্কৃতি ও সমাজ দখল করছে—এমন একটি দাবি সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে। এতে বলা হয়, “রাস্তা থেকে রাস্তা, শহরতলি থেকে শহরতলি, ইসলাম ইংল্যান্ড দখল করছে।” তবে, তথ্য-পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এই দাবি অতিরঞ্জিত এবং ভিত্তিহীন।

ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের ২০২১ সালের জনগণনা অনুসারে, মুসলিম জনসংখ্যা ৩.৮৭ মিলিয়ন (মোট জনসংখ্যার ৬.৫%)। এটি ২০১১ সালের তুলনায় ৪৪% বৃদ্ধি পেয়েছে। অভিবাসন, উচ্চ জন্মহার এবং স্বল্প সংখ্যক ধর্মান্তর এর কারণ। তবে, পিউ রিসার্চের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০৫০ সালেও মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হবেন না—উচ্চ অভিবাসনেও মাত্র ১৭% হতে পারে।

বার্মিংহাম, ব্র্যাডফোর্ড বা টাওয়ার হ্যামলেটসের মতো এলাকায় মুসলিম জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি (৩০-৪০%)। এখানে হালাল দোকান, মসজিদ (যুক্তরাজ্যে ১,৮০০) এবং ঈদ উৎসবের মতো সাংস্কৃতিক পরিবর্তন স্পষ্ট। তবে, এটিকে “দখল” বলা ভুল। “নো-গো জোন” দাবি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে; ২০১৫ সালে ফক্স নিউজ এমন দাবি প্রত্যাহার করেছে।

মুসলিম সম্প্রদায় কিছু ক্ষেত্রে হালাল খাবার বা ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে, যা গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ। তবে, তাদের অর্থনৈতিক প্রান্তিকতা (৪০% দরিদ্র এলাকায় বাস, কর্মসংস্থান হার ৪৮.৬%) এবং ইসলামোফোবিয়ার হামলার শিকার হওয়া (২০২৪-এ রেকর্ড) দখলের দাবিকে খণ্ডন করে। ২০০৯ সালের গ্যালাপ জরিপে দেখা গেছে, মুসলিমরা গড় ব্রিটিশদের চেয়ে বেশি দেশপ্রেমী।

ইংল্যান্ড এখনো প্রধানত ধর্মনিরপেক্ষ এবং খ্রিস্টান-প্রভাবিত (২০২১-এ ৪৬% খ্রিস্টান)। উগ্রবাদ একটি সমস্যা, তবে এটি মুষ্টিমেয় ব্যক্তির, পুরো ৬.৫% মুসলিম জনগোষ্ঠীর নয়। এই গুজব ২০২৪-এর দাঙ্গা এবং ব্রেক্সিট-পরবর্তী উদ্বেগের মধ্যে ছড়িয়েছে, যা সমাজে বিভেদ বাড়াচ্ছে।