আমরা দুটি শত্রুর বিরুদ্ধে লড়ছি : শামীম ওসমান

ছবি : সংগৃহীত

টুইট ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য প্রার্থী একেএম শামীম ওসমান বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এবারের নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দুটি শত্রুর বিরুদ্ধে লড়ছি, ‘একটি দৃশ্যমান, অপরটি অদৃশ্য’। দৃশ্যমান জামায়াত-বিএনপি এখন গোপনে মানুষ হত্যায় লিপ্ত, দেশে অগ্নি সন্তাস চালিয়ে যাচ্ছে। অদৃশ্য শক্তি দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তাই আমি এসেছি আপনাদের ঘুম থেকে জাগাতে। হঠাৎ করে কিছু একটা হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে নাসিক ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিদ্দিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রর সামনে উঠান বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, তাই আপনাদের জাগ্রত করতে এসেছি। আপনারা চোখ কান খোলা রেখে নির্বাচন পর্যন্ত সর্তক থেকে সবাইকে ভোর থেকে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রয়োগ করতে হবে। আর বিশ্ববাসী জানিয়ে দিতে শেখ হাসিনার অধিনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় এবং নির্বাচন করা সম্ভব।

‘নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নের কথা তুলে ধরে বলেন,‘ ৯৬-তে আমরা যখন এসেছি আল্লাহর হুকুমে সকলের সহযোগিতা নিয়ে ২৬ শত কোটি কাজ করেছিলাম, আমি আমার নির্বাচনী এলাকায়। শুধু ফতুল্লা থানা এলাকায় ৬২৫ কোটি টাকার কাজ করতে পেরেছি। পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনটা বিল্ডিংয়ের কাজ করেছি। কৃষি কাজের জন্য ডিএনডি প্রজেক্ট করা হয়েছিল। পানি বন্দি ডিএনডি প্রজেক্টে কাজ করেছি। ঢাকা-নারায়নগঞ্জ সংযোগ করেছি। প্রথমে করলা এক লেন, তার পর দুই লেন, তারপর চার লেন। ডাবল রেল লাইনের কাজ করেছি। পঞ্চবটীতে একটা ফ্লাইওভার করা হচ্ছে ২৬ শত কোটি টাকা ব্যয়ে। পাঁচশ শয্যা বিশিস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল করা হবে যা প্রধানমন্ত্রী পাশ করিয়ে দিয়েছেন। যা আগামীতে সরকার গঠন করলে তা হয়ে যাবে। লিংক রোডে পলিটেকনিকাল কলেজ হচ্ছে। বেশ কিছু কাজ চলমান রয়েছে। আগামীতে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ মেট্রোরেল লাইন করবো আগামীতে।’

তিনি আরোও বলেন, “৭৪ সালে চাইলে আমার বাবা নারায়নগঞ্জের বহু সহায় সম্পত্তিসহ অনেক কিছু করতে পারতেন। তিনি তা না করে আমার ভাইয়ের বিয়ের জন্য ও দল পরিচালনা করার জন্য গোপনে বাড়ি বন্ধক রাখে। নয়শত টাকার জন্য ফরম ফিলাপ করতে পারিনি। আমিও গোপনে আমার বাড়ি বন্ধক রেখেছিলাম ২০২৩ সালে। সাংবাদিকরা তা প্রকাশ করে দিয়েছে। আমাদের বাড়ি নিলামে উঠলে কোন আত্মীয়-স্বজন সেদিন এগিয়ে আসেনি। সেদিন ৪৪ হাজার শ্রমিক এক টাকা করে চাঁদা দিয়ে সেদিন বাড়ির বন্ধক থেকে ছুটিয়েছিলো।”

শামীম ওসমান বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন আছে। আমাদের জেলার ছেলে-মেয়েরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়। কেউ পায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, কেউ পায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। এত দূরে ছেলেমেয়েদের পাঠাতে হবে বলে বাবা-মায়েরা তাদের লেখাপড়া বন্ধ করে দেন। এই কথা চিন্তা করেই নারায়ণগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছি। অবশেষে পার্লামেন্টে বিল পাশ হয়েছে যে এখানে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হবে। এতে করে আমাদের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ রক্ষা হবে। আমি চাই আমাদের বাচ্চারা ভালো থাকুক।’

তিনি বলেন,‘ নারায়ণগঞ্জে রাতের বেলাতে আঠারোর নিচে ছেলেরা ঘর থেকে বের হলে বাবা-মা তেমন একটা বাধা দেয় না। কিন্তু মেয়েরা রাতে বের হবার চেষ্টা করলে বাবা-মা বারণ করেন। তারা বলেন, বাইরে ডাকাত, চোর, দস্যু, মাদকাসক্তরা আছে। আমাদের নারায়ণগঞ্জকে সেফ করতে হবে।’ মনে রাখবেন, নিজের ঘর নিজেকেই পরিষ্কার করতে হবে। এ জন্য আমি একটি সংগঠন করতে চাচ্ছি যার নাম হবে ‘প্রত্যাশা’। ১৮ থেকে ৩০ বয়সীদের নিয়ে আমরা কাজ করব। তরুণদের নিয়ে কাজ করতে হবে। ‘আমরা ৮০ হাজার মানুষ মিলে যদি মাদক, সন্ত্রাস, দস্যুদের বিরুদ্ধে দাঁড়াই আমাদের কেউ থামাতে পারবে না। আপানদের যে কি সমস্যা হচ্ছে তা আমি জানি।’ ইনশাল্লাহ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ফিরলে আগামী ৬ মাসের মধ্যে ফতুল্লায় রাস্তার সমস্যা দূর হবে। বিএনপি-জামায়াত তারা এখন কোথায় গেলো? তাদের আমি খুঁজে পাচ্ছি না। ট্রেনের ভেতর একজন মা-শিশুকে যেভাবে পুড়িয়ে মারা হলো তখন প্রতিটি মায়ের চোখে যে প্রতিবাদ দেখেছি আমার মনে হয় তারা আবারও কোনো হামলার চেষ্টা করলে শুধুমাত্র মহিলারাই তাদের রুখে দাঁড়াবে। তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ আজ সোচ্চার হয়েছে।