রা‌বি‌র পোষ্য কোটা পুনর্বহাল স্থগিত, শিক্ষার্থীরা অনড়

পোষ্য কোটার পুনর্বহাল স্থগিত, তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত।

মুরাদুল ইসলাম স‌নেট: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পোষ্য কোটার পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে।

শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অবস্থান ও আন্দোলন

শিক্ষার্থীরা বিকেল থেকে টানা আন্দোলন চালাচ্ছিলেন। শুক্রবার রাত সোয়া ১১টার দিকে তারা জুবেরী ভবন ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড সংলগ্ন উপাচার্য সালেহ হাসান নকীবের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে পোষ্য কোটার বাতিলের দাবিতে স্লোগান দেন। বিপুল সংখ্যক ছাত্রীও বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেছেন।

শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, “পোষ্য কোটার পুনর্বহাল বা স্থগিতের যে কোনো সিদ্ধান্ত তারা মেনে নেবেন না। কোটা বাতিল না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।” শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান করে কোটার বিলুপ্তি না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন।

উপাচার্যের বক্তব্য

উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা গ্রহণ করেননি। তবে রাত সাড়ে ১১টার দিকে একটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেন,

“এখন পর্যন্ত আমরা খুবই ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছি। কিন্তু এভাবে জিম্মি করে আটকে রেখে সিদ্ধান্ত হতে পারে না। আজকে তারা যা করল, এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন,“রাকসু নির্বাচন হবে কি না, এটা শিক্ষার্থীদের আচরণের ওপর নির্ভর করবে। তবে আমি রাকসু নির্বাচন নিয়ে খুবই সিরিয়াস।”

প্রশাসনের পদক্ষেপ

রাত পৌনে ১টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,

“রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতিতে রবিবার ২১ সেপ্টেম্বর জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে।”

পোষ্য কোটা longstanding বিতর্কিত বিষয়, যা শিক্ষার্থী সমাজে সমান সুযোগ ও ন্যায্যতার প্রশ্নে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। চলমান আন্দোলন প্রশাসন এবং শিক্ষার্থী সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সচেষ্ট, তবে শিক্ষার্থীদের অবস্থান ও দাবির কারণে পরিস্থিতি এখনও অচল।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, কোটা বাতিলের আগে তারা নিজেদের অবস্থান থেকে সরে যাবেন না। আন্দোলন এবং প্রশাসনের পদক্ষেপের ওপর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জনজীবন এবং শিক্ষার্থীদের কার্যক্রমের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়েছে।