গুমের আগাম খবর পেয়েছিলেন ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাশেম আরমান

টুইট ডেস্ক : জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাশেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাশেম আরমান গুম হওয়ার আগে তিনটি ভিন্ন সূত্র থেকে সতর্কবার্তা পেয়েছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রকাশিত তার বই ‘আয়নাঘরের সাক্ষী : গুম জীবনের আট বছর’-এ উঠে এসেছে এই তথ্য।

বইতে তিনি লিখেছেন, গুম হওয়ার দুই সপ্তাহ আগে শেখ পরিবারের একজন সদস্য তাকে গোপন সাক্ষাতে ডেকে জানান-তার নাম নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে এবং যত দ্রুত সম্ভব দেশ ছাড়তে হবে। কয়েক দিনের মধ্যেই বিএনপির এক শীর্ষ নেতার ছেলে একই ধরনের পরামর্শ দেন। তিনিও আরমানকে সতর্ক করে বলেন, সরকার তার বিরুদ্ধে ভয়ংকর পরিকল্পনা করছে।

এরপর সেনাবাহিনীর এক অবসরপ্রাপ্ত জেনারেলের কাছ থেকেও একই সতর্কবার্তা পান আরমান। নয়া দিগন্তের এক সাংবাদিকের মাধ্যমে ওই জেনারেলের সঙ্গে সাক্ষাত করেন তিনি। জেনারেল জানান, এনএসআই প্রধানের কাছ থেকে তিনি জেনেছেন যে মীর কাশেমের ছেলে আন্তর্জাতিক মহলে বিচার নিয়ে সমালোচনা ছড়াচ্ছেন এবং তাকে আর ছাড় দেওয়া হবে না।

একটির পর একটি সতর্কবার্তা পেলেও আরমান দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেননি। তিনি বইতে লিখেছেন, বাবাকে মৃত্যুর মুখে রেখে নিজের নিরাপত্তা বেছে নিতে তার বিবেক সায় দেয়নি। পরে আইনজীবী হিসেবে বিশেষ অনুমতি নিয়ে কারাগারে গিয়ে বাবার সঙ্গে সাক্ষাত করেন তিনি। বাবাকে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন,“আল্লাহর ওপর ভরসা করো বেটা। তুমি দেশেই থাকো। পরিবারের জন্য এখন তোমার থাকাটা খুব দরকার।”

বাবার কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে আরমান দেশে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু মাত্র তিন দিন পর, ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট নিরাপত্তা বাহিনী তাকে বাসা থেকে তুলে নেয়। এরপর টানা আট বছর তাকে গোপন কারাগার ‘আয়নাঘর’-এ আটক রাখা হয়। অবশেষে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মুক্তি পান তিনি।