সৌদি আরব-পাকিস্তান কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তির প্রতি ভারতের অফিসিয়াল বিবৃতি

সৌদি আরব-পাকিস্তান কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি: আঞ্চলিক নিরাপত্তায় নতুন মোড়, ভারত সতর্কতার সুর

বিশ্ব ডেস্ক: সৌদি আরব এবং পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের নিরাপত্তা সহযোগিতাকে আনুষ্ঠানিক করে তোলার লক্ষ্যে একটি কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি (Strategic Mutual Defence Agreement – SMDA) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তি অনুসারে, এক দেশের উপর হামলাকে দ্বিতীয় দেশের উপর হামলা হিসেবে গণ্য করা হবে, যা দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যকে নতুন করে সাজাতে পারে।

চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে গত ১৭ সেপ্টেম্বর রিয়াদে, যখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে আলোচনা করেন।

ভারতের অফিসিয়াল বিবৃতি

ভারতের বাহ্যিক মন্ত্রণালয় (Ministry of External Affairs – MEA) সৌদি আরব এবং পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি (Strategic Mutual Defence Pact) স্বাক্ষরের খবর নিয়ে সতর্কতার সুরে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

অফিসিয়াল স্পোকসপারসন শ্রী রণধীর জৈস্বাল মিডিয়া ক্যোয়ারির উত্তরে বলেছেন, “আমরা সৌদি আরব এবং পাকিস্তানের মধ্যে একটি কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের রিপোর্ট দেখেছি। সরকার জানত যে এই উন্নয়ন, যা দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের একটি ব্যবস্থাকে আনুষ্ঠানিক করে তুলেছে, বিবেচনাধীন ছিল। আমরা এই উন্নয়নের জাতীয় নিরাপত্তা, এবং আঞ্চলিক ও বিশ্বব্যাপী স্থিতিশীলতার জন্য প্রভাব অধ্যয়ন করব। সরকার ভারতের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা এবং সমস্ত ক্ষেত্রে ব্যাপক জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কটিবদ্ধ।”

এই বিবৃতি MEA-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে এবং এটি চুক্তির সম্ভাব্য প্রভাব বিশ্লেষণের উপর জোর দিয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যকে প্রভাবিত করতে পারে।

আঞ্চলিক প্রভাব

এই চুক্তি শুধু দ্বিপাক্ষিক নয়, বরং গাল্ফ সহযোগিতা পরিষদ (GCC) এবং ইসলামী বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিছু রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইউএই এবং কাতারও এতে যোগ দিতে পারে, যা একটি বৃহত্তর জয়েন্ট ডিফেন্স প্যাক্ট তৈরি করবে। তবে ইরান, তুরস্ক এবং কাতারের মতো দেশগুলোর জন্য এটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে। বিশ্বব্যাপী, এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমাতে পারে এবং চীন-পাকিস্তান অংশীদারিত্বের সঙ্গে মিলে নতুন জোট গঠনে সাহায্য করবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই চুক্তি ‘ওয়াটারশেড মোমেন্ট’—যা আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে পুনর্গঠন করবে। তবে এর বাস্তব প্রয়োগ যুদ্ধের সময়ই পরীক্ষিত হবে। ভারতের জন্য এটি একটি সতর্কতার সংকেত, যা কূটনৈতিক এবং সামরিক কৌশল পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে।