তারেক রহমানের সতর্কবার্তা: ব্যবসা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ জরুরি
বাংলাদেশ-এর এলডিসি পর্যায় থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি: ব্যবসা, অর্থনীতি ও জনগণের জন্য চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ।
বদিউল আলম লিংকন: নভেম্বর ২০২৬-এ বাংলাদেশ জাতিসংঘের ন্যূনতম উন্নয়নশীল দেশ (LDC) তালিকা থেকে উত্তরণের পথে রয়েছে। এটি দেশের জন্য একটি গৌরবের মুহূর্ত হলেও, অর্থনীতি ও ব্যবসায়িক কার্যক্রমে সম্ভাব্য ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তারেক রহমানের X পোস্টে উল্লিখিত মত অনুযায়ী, দেশকে এলডিসি উত্তরণের প্রস্তুতিতে সতর্ক থাকতে হবে, বিশেষ করে ব্যবসা ও শ্রমিকদের ক্ষেত্রে। তিনি উল্লেখ করেছেন:
“Graduation is not just a milestone – it comes with risks and challenges which we need to be honest about, directly affecting our economy and people.”
বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, সতর্কতা অবলম্বন না করলে দেশের অর্থনীতি এবং নাগরিকদের জীবনযাত্রা সরাসরি প্রভাবিত হতে পারে। প্রধান উদ্বেগগুলো নিম্নরূপ:
বাণিজ্য সুবিধার হ্রাস: এলডিসি থেকে উত্তরণের পর, বিশেষ বাণিজ্য সুবিধা হারানোতে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রভাব পড়তে পারে, যা দেশের প্রতিযোগিতা শক্তিকে দুর্বল করতে পারে।
সুবিধাজনক ঋণ ও সহায়তার কমে যাওয়া: উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পাওয়া বিশেষ ঋণ ও আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়ায় আর্থিক চাপ বৃদ্ধি পাবে। বর্তমান সময়ে দেশের বৈদেশিক রিজার্ভ ও ঋণের পরিমাণ ইতিমধ্যেই চাপের মধ্যে রয়েছে।
ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন (WTO) নীতি: সাবসিডি, ওষুধের পেটেন্টসহ বিশেষ সুবিধা আর প্রযোজ্য হবে না। এর ফলে মূল ওষুধের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে।
একক খাতের ওপর রপ্তানি নির্ভরতা: পোশাক খাতের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা দেশের অর্থনীতিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে যদি বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা কমে যায়।
বিএনপি মনে করছে, এই ঝুঁকিগুলো মোকাবিলায় এখনই পদক্ষেপ নেওয়া আবশ্যক। সম্ভাব্য সমাধানগুলো হলো:
১. রপ্তানি খাতের বৈচিত্র্য: শুধুমাত্র তৈরি পোশাক নয়, তথ্যপ্রযুক্তি (ICT), ঔষধ, এবং অন্যান্য মানসম্মত শিল্পে রপ্তানি বাড়ানো।
২. সার্বজনীন আর্থিক শৃঙ্খলা: জনসম্পদ ও প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা যাতে ঋণ চক্রের ফাঁদে না পড়ি।
৩. প্রোডাক্টিভিটি ও অবকাঠামো উন্নয়ন: উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, বাণিজ্যিক লজিস্টিকস ও আধুনিক অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা।
৪. আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন: সবুজ অর্থায়ন ও বাণিজ্য সুবিধার জন্য বিদেশি প্রতিশ্রুতিগুলো কার্যকর করা।
উত্তরণ শুধু একটি সাফল্যের মাইলফলক নয়; এটি দেশের শ্রমিক, কৃষক ও যুব সমাজকে ভঙ্গুর অবস্থায় না ফেলে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং নাগরিকদের জন্য বাস্তব সুযোগ সৃষ্টির জন্য একটি সময়োপযোগী সংকেত।
বাংলাদেশের জনগণকে পিছিয়ে না রাখতেই, এখনই কার্যকর নীতি, বিনিয়োগ ও সহায়তা প্রয়োগের প্রয়োজন। এলডিসি উত্তরণের সুফল পেতে হলে দেশের অর্থনীতি ও ব্যবসায়িক খাতকে আরও শক্তিশালী, বহুমুখী এবং স্থিতিশীল করতে হবে।
তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ: তারেক রহমানের X পোস্ট এবং সংশ্লিষ্ট রিপোর্ট