বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার উদ্যোগ
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মার্কিন সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও জ্বালানি সহযোগিতা আরও গভীর করার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন।
টুইট ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি ও উন্নয়ন সহযোগিতা আরও গভীর করার জন্য বাংলাদেশের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে মার্কিন সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।
বৈঠকে ড. ইউনূস ইউএসটিআরের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “সমর্থনের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। যা ঘটেছে, তাতে আমরা অত্যন্ত খুশি। এটি আমাদের অর্থনীতির মূল চাবিকাঠি।” তিনি উল্লেখ করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নামানো দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
প্রেস উইং জানায়, সাক্ষাৎকালে দুই পক্ষ বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা হ্রাস, মার্কিন কৃষিপণ্য যেমন তুলা ও সয়াবিনের আমদানি সম্প্রসারণ, এলপিজি আমদানি, বেসামরিক বিমান ক্রয়, মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং রোহিঙ্গা মানবিক সংকটসহ জ্বালানি সহযোগিতা বৃদ্ধি বিষয়ে আলোচনা করেন।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে প্রস্তুত এবং আশা প্রকাশ করেন যে এটি আরও শুল্ক হ্রাসের পথ প্রশস্ত করবে। তিনি আরও বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির খসড়া দ্রুত সইয়ের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে টেকসই ও পারস্পরিক সুবিধাজনক বাণিজ্য অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের স্বার্থ যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের কাছাকাছি, যা আলোচনাকে সহজ ও আশাব্যঞ্জক করে। এছাড়া মার্কিন প্রস্তাবিত ১১-দফা শ্রম কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের পদক্ষেপ তুলে ধরেন এবং আন্তর্জাতিক শ্রম মান ও ন্যায্য অনুশীলন বজায় রাখার ওপর জোর দেন।
ড. ইউনূস আরও জানান, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও রেয়াতি ঋণের প্রবাহ সম্প্রসারণের প্রত্যাশা রাখে। দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করার বিষয়ে সফররত ইউএসটিআর দলকে আশ্বস্ত করেন তিনি।
বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ বাংলাদেশের গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি প্রশংসা করেন এবং দুই দেশের অংশীদারিত্ব জোরদার করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, এই প্রাথমিক আলোচনা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং শুল্ক চুক্তি ও ক্রয়ের প্রতিশ্রুতি সময়মতো বাস্তবায়নের গুরুত্ব অপরিহার্য।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, ইউএসটিআরের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক এমিলি অ্যাশবি, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মুর্শেদ, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান এবং যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন।