রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ঝুঁকিতে বান্দরবান টানেল

১১ কোটি টাকার বান্দরবান টানেল অবহেলায় অযত্নে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভেতরে ঢুকলেই অন্ধকার, দেয়ালের ফাঁক বেয়ে টুপটাপ পানি পড়ছে, নিচে জমে আছে কাদা—এমন চিত্রই এখন দেখা যাচ্ছে বান্দরবান শহরের পুরনো ও নতুন বাস টার্মিনাল সংযোগকারী ‘টানেল’-এ। প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ টানেলটি উদ্বোধনের মাত্র দুই বছর পরেই অব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

নির্মাণ ও হস্তান্তর

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের অক্টোবরে টানেলটির উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পরপরই এটি বান্দরবান পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে ২০২১ সালে নবনির্মিত হাফেজঘোনা বাসস্টেশনও উন্নয়ন বোর্ড পৌরসভার হাতে তুলে দিয়েছিল। উদ্বোধনের পর থেকেই স্থানীয়দের কাছে সংযোগ সড়কটি ‘টানেল’ নামেই পরিচিত হয়ে ওঠে।

রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলা

পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, আর্থিক সংকটের কারণে টানেলের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব হয়নি। নতুন কেন্দ্রীয় বাসস্টেশনটি বর্ষায় ডুবে যাওয়ায় সেখান থেকে কোনো ইজারা আয়ও হয়নি। ফলে টানেলের যত্ন ও ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করতে পারেনি পৌরসভা।

স্থানীয়দের অভিযোগ

টানেল ব্যবহারকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হলেও আজ তা অযত্নে নষ্ট হচ্ছে। শহরের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, “বর্ষায় টানেলের ভেতর পানি জমে থাকে, কাদা আর দুর্গন্ধে হাঁটাচলা করা যায় না। রাতে তো অন্ধকারে প্রবেশ করাই ঝুঁকিপূর্ণ।”
আরেকজন শিক্ষার্থী জানান, “নিরাপদ চলাচলের জন্য এ টানেল নির্মাণ হয়েছিল। অথচ আজ সাধারণ মানুষ ভয়ে এ পথে হাঁটতেই চায় না।”

পৌরসভার প্রতিক্রিয়া

বান্দরবান পৌরসভার মেয়র বলেন, “আমাদের হাতে পর্যাপ্ত বাজেট নেই। নতুন কেন্দ্রীয় বাসস্টেশন থেকে প্রত্যাশিত আয় হয়নি। তবে আমরা সরকারি সহায়তা চাইছি। সহযোগিতা পেলে টানেলের আলো, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ও সংস্কার দ্রুত শুরু করা হবে।”

প্রশ্নের মুখে উন্নয়ন ব্যয়

প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হলেও মাত্র দুই বছরেই টানেলের এই পরিণতি স্থানীয়দের হতাশ করেছে। উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি রক্ষণাবেক্ষণ পরিকল্পনা না থাকায় কোটি কোটি টাকার প্রকল্প অল্প সময়েই অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে।