নাটোরে ডায়রিয়া প্রকোপে দায়ী পানির নমুনায় মেলেনি জীবাণু
টুইট ডেস্ক: নাটোর পৌরসভার সাপ্লাই পানিতে পানিবাহিত কোনো রোগের জীবাণু পাওয়া যায়নি। জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের বগুড়া জোনাল ল্যাবে পানির নমুনা পরীক্ষা শেষে এ তথ্য জানিয়েছে সরকারি দপ্তরটি। এই পানি পানেই নাটোর পৌরসভার একটি ওয়ার্ডের দুই শতাধিক মানুষ হঠাৎ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তবে এ ঘটনার জন্য গৃহস্থালির সংযুক্ত পাইপ লাইনকে দায়ী করছে নাটোর পৌর কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার(৪ঠা জুলাই) দুপুরে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বগুড়া জোনাল ল্যাবে পানির নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন প্রকাশ করে নাটোর জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুধবার (৩রা সেপ্টেম্বর) নাটোর পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের ঝাউতলা পাম্প সংলগ্ন এলাকা, পটুয়াপাড়া গুচ্ছগ্রাম সংলগ্ন এলাকা এবং ঝাউতলা বস্তি এলাকা থেকে পৌরসভার সাপ্লাই লাইনের পানির নমুনা সংগ্রহ করে নাটোর পৌরসভা ও নাটোর জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এই তিন এলাকা থেকে বেশি রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। সংগৃহীত নমুনা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বগুড়া জোনাল ল্যাবের সিনিয়র কেমিস্ট বরাবর পাঠায় নাটোর পৌরসভা। বগুড়া ল্যাবে পানিতে ফেকাল কলিফর্মের মাত্রা পরীক্ষা করেন জুনিয়র কেমিস্ট আলাউদ্দিন আল ফারুক ও স্যাম্পল এনালাইজার হাফিজুর রহমান। নমুনা পানিতে এই উপাদানের মাত্রা শূন্য পাওয়া যায়।
বগুড়া জোনাল ল্যাবের সিনিয়র কেমিস্ট আব্দুল জব্বার জানান, ফেকাল কলিফর্ম হলো এক ধরনের কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া যা মানুষ ও উষ্ণ রক্তের প্রাণীর মলে পাওয়া যায় এবং এটি মলদূষণের একটি সূচক হিসেবে কাজ করে। ল্যাবে পরীক্ষিত নমুনার এ ধরনের কিছু পাওয়া যায়নি।
নাটোর পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হক বলেন, পৌরসভার সাপ্লাই পানিতে কোন দূষণ বা জীবাণু না থাকার বিষয়টি আমরা আগেই বলেছিলাম। তারপরও পৌরবাসীর স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনা করে পানির নমুনা পাঠানো হয় এবং পানি দুষণমুক্ত হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে। আমরা ধারণা করছি পৌরসভার সাপ্লাই লাইনের শেষ প্রান্ত থেকে যে সার্ভিস লাইন গৃহস্থালি বাসাবাড়ি পর্যন্ত টেনে নেয়া হয়েছে, সেই লাইন ত্রুটিপূর্ণ। আমরা পৌরসভার সমস্ত লাইন ও বাই-লাইনগুলো ইতোমধ্যে পরীক্ষা করেছি যেখানে কোন ত্রুটি বা লিকেজ পাই নি।
নাটোর জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল কবীর ভুঁইয়া বলেন, পৌরসভার আক্রান্ত ওয়ার্ডটিতে ইতোমধ্যে ২০ হাজার পিস পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। আরো ৪০ হাজার পিস ট্যাবলেট মজুদ আছে। আশা করছি কোন সংকট হবে না।
এদিকে, আজ দ্বিতীয় দিনেও নতুন করে শতাধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত নাটোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৬০ জন রোগী। এর আগে গতকাল বুধবার ভর্তি ছিল১৪৭ জন।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুক্তাদির আরেফিন বলন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য আজ সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে আইসিডিডিআরবির একটি প্রতিনিধি দল নাটোরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। রোগীদের যথাযথ সেবা দিতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।