আচরণবিধি লঙ্ঘনে প্রার্থিতা বাতিল হতে পারে অনেকের

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভোটের সুষ্ঠুতা এবং পরিবেশ রক্ষায় তৎপর নির্বাচন কমিশন (ইসি) শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে। তার অংশ হিসেবে আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীদের একের পর এক শোকজ ও তলব করা হচ্ছে।

এছাড়াও লাগাম টানতে মাঠের প্রতিবেদনের আলোকে কোনো কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলাও করছে কমিশন। এরপরও থামানো যাচ্ছে না অনেক প্রার্থীকে। বেপরোয়া এসব প্রার্থীর বিরুদ্ধে আরও হার্ডলাইনে যাচ্ছে ইসি। সেক্ষেত্রে এবার প্রথম বারের মতো প্রার্থীদের বাতিলের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে কমিশন। যে তালিকার রাজশাহীরও একজন প্রার্থী রয়েছেন; তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোট করছেন।

আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি এখন পর্যন্ত অন্তত ২১৫ জন প্রার্থী ও তাদের সমর্থককে শোকজ করেছে। কারণ দর্শানোর জন্য তলব করা হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র অনেক হেভিওয়েট প্রার্থীকে। এর মধ্যে কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং প্রার্থীদের অনুসারীরাও রয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘন ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে প্রার্থিতা বাতিল করতে আমরা বাধ্য হব।’

ইসিসূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন জায়গায় দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় সহিংস হয়ে উঠেছে ভোটের পরিবেশ। এসব ঘটনায় ইতিমধ্যেই দুই জন নিহত ও বহু সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে চরম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে নির্বাচন কমিশন। ভোটের দিন পর্যন্ত সহিংসতা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।

এমন প্রেক্ষাপটে কমিশনের করণীয় নিয়ে শনিবার আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে তিন জন কমিশনারের উপস্থিতিতে অনির্ধারিত একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান, আলমগীর ও আনিছুর রহমান এতে অংশ নেন। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ও কমিশনার রাশেদা বেগম ঢাকার বাইরে রয়েছেন। বৈঠকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েকজনের প্রার্থিতা বাতিলের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ তালিকায় রয়েছেন রাজশাহী-৪ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী ও তাহেরপুর পৌরসভার সদ্য সাবেক মেয়র আবুল কালাম আজাদ, বরগুনা-২ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভূ, চট্টগ্রাম-১৬ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, কুমিল্লা-৬ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান এমপি আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার, ঝিনাইদহ-১ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান এমপি আব্দুল হাই ও মাদারীপুর-৩ আসনের প্রার্থী আব্দুস সোবহান গোলাপসহ আরও কয়েকজন। মাঠের আরও কিছু তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের পরই তাদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যাবে কমিশন।

নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, সংশ্লিষ্ট ডিসি ও এসপির তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রার্থীদের বিষয়ে কমিশন চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।