প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের আন্দোলন: শান্তিপূর্ণ সমাধানই একমাত্র পথ

ব‌দিউল আলম লিংকন: সারা দেশের প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের তিন দফা দাবির জন্য আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। এই দাবির মধ্যে রয়েছে সরকারি চাকরিতে প্রকৌশলীদের কোটা বাস্তবায়ন, শিক্ষার্থী রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকির বিচার, এবং শিক্ষার্থীদের পদোন্নতি ও শিক্ষাগত মর্যাদা সংক্রান্ত অন্যান্য প্রক্রিয়া।

বুধবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর রেলভবনে শিক্ষার্থীদের ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এবং পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বৈঠক প্রায় এক ঘণ্টা চললেও কোনো সমাধান ছাড়াই শেষ হয়।

বৈঠকে জানা যায়, সরকার গঠিত সাত সদস্যের উচ্চপর্যায়ের কমিটির পাঁচজন সদস্য অনুপস্থিত থাকায় সমস্যা সমাধান হয়নি।

তাই আজ বৃহস্পতিবার পুরো কমিটি নিয়ে পুনরায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, বৈঠকের ফলাফল শাহবাগে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।

এই পরিস্থিতিতে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করণীয় হলো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সংলাপ নিশ্চিত করা।

বৈঠকে উপস্থিত থাকবে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, শিক্ষক, সরকারি উপদেষ্টা এবং প্রয়োজনে মধ্যস্থতাকারী কমিটি। শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস বা জলকামান ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী শুধুমাত্র জনসংহতি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব পালন করবে।

অবশ্য শিক্ষার্থীদেরও দায়িত্বশীল আচরণ নিশ্চিত করতে হবে। আন্দোলন চলাকালীন সহিংসতা, ভাঙচুর বা অন্যের ক্ষতি এড়ানো প্রয়োজন। কর্মসূচির রুট ও সময়সূচি পূর্বনির্ধারিত করে জনদুর্ভোগ কমাতে হবে। এছাড়া, আটক শিক্ষার্থী ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।

দীর্ঘমেয়াদে, প্রকৌশল শিক্ষার নীতিমালা এবং বিএসসি-ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পেশাগত শ্রেণিবিন্যাস নিয়ে জাতীয় নীতি প্রণয়ন করা জরুরি। কোটা, গ্রেড ও পদোন্নতির সমস্যা যৌক্তিক ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সমাধান করতে হবে। ভবিষ্যতে একই ধরনের দ্বন্দ্ব এড়াতে স্টেকহোল্ডার মিটিং বা পরামর্শ বোর্ড নিয়মিত রাখা প্রয়োজন।

এভাবে সব পক্ষ সচেতন থাকলে আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে যাবে, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে এবং ফ্যাসিবাদী বা অপপ্রচারের সুযোগও কমে আসবে। সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ ও শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির স্বীকৃতি দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষাব্যবস্থা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখবে।