গণঅভ্যুত্থানকে ষড়যন্ত্র বলা ইতিহাস বিকৃতি: জনগণের কড়া প্রতিক্রিয়া
সারজিসদের নেতা নয়, অভিনেতা: জামায়াতকেই দায়ী করলেন ফজলুর রহমান: জনমনে তীব্র প্রতিবাদ।
টুইট ডেস্ক: বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানকে ‘ষড়যন্ত্র’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এ ঘটনায় সারজিস আলমরা আসলে ‘অভিনেতা’।
তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সহযোগী সংগঠন ছাত্রশিবিরকে এই ষড়যন্ত্রের জন্য দায়ী করেন এবং তাদের ‘কালো শক্তি’ হিসেবে অভিহিত করেন।
সম্প্রতি এক টকশোতে ফজলুর রহমান বলেন, “যারা ৫ আগস্ট ঘটাইছে, সেই কালো শক্তির নাম জামায়াতে ইসলাম। তাদের অগ্রগামী শক্তি হলো ইসলামী ছাত্রশিবির। সারজিস আলমরা ৫ আগস্টের অভিনেতা। আমি তাদের নেতা বলতে চাই না, বরং অভিনেতা বলব। আলবদর, আল শামস, জামায়াতে ইসলাম—আমরা ভেবেছিলাম ৫৪ বছর পর তারা পূর্বপুরুষের পরাজয়ের গ্লানি ভুলে গেছে। কিন্তু দেখা গেল সেই গ্লানি দ্বিগুণ আকারে ফিরে এসেছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করছে জামায়াত। তার ভাষায়, “তারা চক্রান্ত করে নিজেদের দেশে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এর পেছনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র আছে। সেই ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশে তারা এখন অর্থ-বিত্তশালী শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
ফজলুর রহমানের দাবি, অনানুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের ক্ষমতায়ও রয়েছে জামায়াত। তবে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে পারবে না তারা। “ভোটের গোণায় আগে জামায়াতের সমর্থন ছিল ৭%, এখন আরও ১% কমবে। কারণ মানুষ বুঝে গেছে, তারা রাজাকারের বংশধর। এখনও প্রতিশোধ নিতে চায়,” বলেন তিনি।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, দেশের বিভিন্ন প্রশাসন ও প্রতিষ্ঠানে জামায়াত প্রভাব বিস্তার করেছে। “তারা টাকা দিয়ে তরুণদের প্রভাবিত করছে। এসিল্যান্ড, ইউএনও, পুলিশ থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত, বাংলাদেশ ব্যাংক, শেয়ার মার্কেট, হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়—সব জায়গায় তারা প্রভাব বিস্তার করেছে। তারা এখন মনে করছে অনানুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতায় আছে।”
তীব্র প্রতিবাদ ও জনগণের মতামত
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমানের সাম্প্রতিক বক্তব্যকে জনগণ চরমভাবে নিন্দা জানিয়েছে। তিনি গণঅভ্যুত্থানকে ‘ষড়যন্ত্র’ আখ্যা দিয়ে সারজিস আলমসহ আন্দোলনের নেতৃত্বকে ‘অভিনেতা’ বলেছেন—যা জনগণের আত্মত্যাগ ও গণআকাঙ্ক্ষাকে হেয় করার শামিল।
সাধারণ মানুষ বলছে—“আমাদের আন্দোলন ষড়যন্ত্র নয়, বাঁচার লড়াই। রাজপথে যারা প্রাণ দিয়েছে, তারা কোনো অভিনেতা নয়, তারা শহীদ।”
“গণআন্দোলনকে ষড়যন্ত্র বলাটা আসলে জনগণের শক্তিকে ভয় পাওয়ারই বহিঃপ্রকাশ।”
“জামায়াত-শিবিরের নামে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। অথচ আন্দোলনে ছিল ছাত্র, শ্রমিক, সাধারণ মানুষ—যারা ন্যায়বিচার আর পরিবর্তনের জন্য লড়ছে।”
সাধারণ মানুষের অভিমত, এ ধরনের মন্তব্য আসলে জনগণকে ভীত করার চেষ্টা। কিন্তু স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী জনগণ অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই থেকে কখনোই পিছু হটবে না।
গণআন্দোলন ষড়যন্ত্র নয়, এটি মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রাম। জনগণ বলছে—অভিনেতা নয়, আমরা সকলে আন্দোলনের সৈনিক।