যৌথ বাহিনীর অভিযান: সারাদেশে এক সপ্তাহে আটক ৫৬
টুইট ডেস্ক: দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। গত ১৪ আগস্ট থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়।
এসব অভিযানে সেনাবাহিনী ছাড়াও পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা অংশ নেয়।
অভিযানকালে সন্ত্রাসী, অবৈধ অস্ত্রধারী, ডাকাত, কিশোর গ্যাং সদস্য, চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারী, দুষ্কৃতিকারী, জুয়াড়ি, মাদক ব্যবসায়ী এবং মাদকাসক্তসহ মোট ৫৬ জনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সেনা সূত্রে জানা যায়, এরা দীর্ঘদিন ধরে সংগঠিত অপরাধচক্রের সঙ্গে জড়িত ছিল এবং বিভিন্ন এলাকায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছিল।
গ্রেফতারকৃতদের নিকট থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে— ১৬টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৬টি হ্যান্ড গ্রেনেড, ১০৩ রাউন্ড বিভিন্ন ধরনের গুলি, ২ রাউন্ড খালি কার্তূজ, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র, বিপুল পরিমাণ গাঁজা, ইয়াবা, হেরোইনসহ মাদকদ্রব্য, সিলেটের সাদা পাথর, একাধিক মোবাইল ফোন, মোটরসাইকেল ও নগদ অর্থ। এসব সামগ্রী শুধু অপরাধীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রমাণই নয়, বরং তাদের সংগঠিত নেটওয়ার্কেরও ইঙ্গিত বহন করছে।
রাজধানী ঢাকায় পরিচালিত অভিযানে সবচেয়ে বেশি অপরাধী আটক করা হয়। এখানে ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কিশোর গ্যাংয়ের একাধিক সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
চট্টগ্রাম অঞ্চলে ১১ জনকে আটক করা হয়, যাদের কাছ থেকে ইয়াবা, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
সিলেট অঞ্চলে পাথর চোরাচালান ও মাদক ব্যবসায় জড়িত ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
খুলনায় ৬ জন, রংপুরে ৫ জন, ময়মনসিংহে ৩ জন এবং বরিশালে ২ জনকে আটক করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইনি প্রক্রিয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন থানায় নতুন করে একাধিক মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এসব অপরাধীকে বিচারের মুখোমুখি করতে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুধু অভিযান নয়, সেনাবাহিনী দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত টহল ও চেকপোস্ট কার্যক্রমও চালাচ্ছে। ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহে সেনা টহল বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ন্ত্রণ ও অস্থিতিশীলতা ঠেকাতে সেনাবাহিনী সরাসরি সম্পৃক্ত রয়েছে। এর ফলে শ্রমিক আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে আসছে এবং উৎপাদন কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হচ্ছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ভবিষ্যতেও সেনাবাহিনী এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে। পাশাপাশি জনগণকে আহ্বান জানানো হয়েছে যেকোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করলে দ্রুত নিকটস্থ সেনা ক্যাম্প অথবা থানায় তথ্য প্রদানের জন্য।