ময়মনসিংহ-৮, ৯, ১০ ও ১১: নির্বাচনী উত্তাপ
বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে প্রতিযোগিতা, প্রচারে এগিয়ে জামায়াত
টুইট প্রতিবেদন: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ, নান্দাইল, গফরগাঁও ও ভালুকায় নির্বাচনী উত্তাপ বেড়েই চলেছে। দীর্ঘ দেড় দশক পর ভোটের পরিবেশ ফিরতে শুরু করায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে সভা-সমাবেশ, মিছিল ও গণসংযোগ।
বিএনপি নেতারা হাইকমান্ডে মনোনয়ন দৌড়ে ব্যস্ত থাকলেও জামায়াত ইসলামী প্রার্থী চূড়ান্ত করে মাঠে প্রচারে এগিয়ে রয়েছে। ইসলামী আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদসহ অন্যান্য দলও সক্রিয়ভাবে মাঠে নামছে।
ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ)
বিএনপির ভেতরে আলোচনায় আছেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক প্রকৌশলী লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু। তরুণ প্রজন্মকে আন্দোলিত করা, স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি বিরোধী অবস্থান ও নিজ উদ্যোগে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জেনারেটর স্থাপনসহ নানা কর্মকাণ্ডে তিনি তৃণমূলে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। মনোনয়ন পাবেন বলে তার বিশ্বাস।
আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক সংসদ সদস্য শাহ নুরুল কবীর শাহীন পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগাচ্ছেন। তবে দলের দুর্দিনে নেতাকর্মীদের পাশে না থাকার অভিযোগে তাকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে।
জামায়াত ইতোমধ্যেই অধ্যক্ষ মাওলানা মঞ্জুরুল হক হাসানকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। ইসলামী আন্দোলন থেকে মুফতি হাবিবুল্লাহ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে মাওলানা খন্দকার আবুল ফজল ও এনসিপি থেকে মোজাম্মেল হক ভোটের মাঠে সক্রিয়।
ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল)
আসনটিতে বিএনপির অন্তত পাঁচ নেতা মনোনয়নের দৌড়ে আছেন। সাবেক এমপি আনোয়ারুল হোসেন খান চৌধুরীর ছেলে ইয়াসের খান চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. এ কে এম শামসুল ইসলাম শামস, সাবেক এমপি খুররম খান চৌধুরীর ছেলে নাসের খান চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা মামুন বিন আবদুল মান্নান ও মেজর জেনারেল (অব.) আনোয়ারুল মোমেন সবাই সংগঠন ও লবিংয়ে ব্যস্ত। শেষ পর্যন্ত একক প্রার্থীকে নিয়ে ঐক্য গড়া বিএনপির বড় চ্যালেঞ্জ।
জামায়াত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম চানকে সমর্থন দিয়েছে এবং তিনি আগেই প্রচার শুরু করেছেন। এনসিপি থেকে আশিকিন আলম রাজন, গণঅধিকার পরিষদ থেকে মাহবুব আলম মাহবুব ও ইসলামী আন্দোলন থেকে মাওলানা মুফতি সাইদুর রহমান প্রার্থী হয়েছেন।
ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও)
এ আসনে বিএনপির ছয় নেতা মনোনয়ন চাইছেন। দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ছাত্রনেতা আলমগীর মাহমুদ আলম, অ্যাডভোকেট আল ফাতাহ্ খান, এবি সিদ্দিক, আকতারুজ্জামান বাচ্চু, ডা. মোফাখখারুল ইসলাম রানা ও মুশফিকুর রহমান সবাই মাঠে সক্রিয় গণসংযোগ চালাচ্ছেন।
জামায়াত উপজেলা শাখার আমির ইসমাইল হোসেনকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তিনি ইউনিয়নভিত্তিক গণসংযোগ শুরু করেছেন।
ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা)
শিল্পাঞ্চল হওয়ায় শ্রমিক ভোটার এ আসনে বড় ফ্যাক্টর। ভোটাররা প্রার্থীর কাজ ও বিশ্বাসযোগ্যতাকেই বেশি গুরুত্ব দেন। বিএনপির মনোনয়ন চাইছেন ফখরউদ্দিন আহাম্মেদ বাচ্চু, মুহাম্মদ মুর্শেদ আলম ও অ্যাডভোকেট আনোয়ার আজিজ টুটুল।
অন্যদিকে জামায়াতের প্রার্থী ছাইফ উল্লাহ পাঠান প্রচারে অনেক এগিয়ে আছেন। তিনি তরুণ ও ধর্মভিত্তিক ভোটারদের কাছে ‘সুশাসন, ন্যায্যমূল্যের বাজার, যুবকর্মসংস্থান’ বার্তা দিয়ে গণসংযোগ করছেন।
এনসিপি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী ডা. জাহিদুল ইসলাম চিকিৎসক পরিচয় ও পরিবর্তনের বার্তা নিয়ে হাট-বাজারে প্রচারে নামছেন।
ভোটারদের প্রত্যাশা
শ্রমিক মর্তুজা আহমেদ বলেন, “যেসব প্রার্থী জানমালের নিরাপত্তা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করবেন তাদের ভোট দেব।” মাছ ব্যবসায়ী আবদুল খালেক বলেন, “রাস্তার দুর্ঘটনা, ছিনতাই, ড্রেন মেরামতে যে কাজ করবে তাকেই সমর্থন করব।”