নর্থ কোরিয়ার পারমাণবিক হুমকি : সাউথ কোরিয়া-জাপান-আমেরিকা যৌথ মহড়া

দূরপাল্লার বোমারু বিমান উড্ডয়ন করেছে অ্যামেরিকা। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ব ডেস্ক : নর্থ কোরিয়ার পাঁচ মাসের মধ্যে প্রথম আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার চালানোর কয়েক দিন পর বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সাউথ কোরিয়া ও জাপানের সঙ্গে যৌথ মহড়ায় দূরপাল্লার বোমারু বিমান ব্যবহার করেছে অ্যামেরিকা।

সাউথ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফ বিবৃতিতে বলেন, “নর্থ কোরিয়ার পারমাণবিক হুমকির বিরুদ্ধে দুই দেশের যৌথ প্রতিক্রিয়া জোরদার করার লক্ষ্যে সাউথ কোরিয়ার দ্বীপ জেজুতে এই ত্রিপক্ষীয় প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।”

ওই মহড়ায় “আমেরিকার বি-ওয়ান বি বোমারু বিমান” এবং “সাউথ কোরিয়া ও জাপানের যুদ্ধ বিমান অংশ নেয়।”

‘বি-ওয়ান বি বোমারু বিমানটি প্রচলিত যেকোন বড় অন্ত্র বহন করতে সক্ষম। নর্থ কোরিয়া এর আগে বোমারু বিমান মোতায়েনকে আমেরিকান শত্রুতার প্রমাণ বলে অভিহিত করে এবং ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানায়।’

আমেরিকা ও সাউথ কোরিয়ার সংঘাতপূর্ণ পদক্ষেপের বিষয়ে সতর্ক বার্তা হিসেবে সোমবার সমুদ্রে হোয়াসং-এইটিন আইসিবিএম ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে নর্থ কোরিয়া। নর্থ কোরিয়া তাদের পারমাণবিক প্রতিরোধ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনার জন্য সম্প্রতি আমেরিকা-সাউথ কোরিয়ার বৈঠকের কথা উল্লেখ করেছে।

আমেরিকা-সাউথ কোরিয়া ও জাপান এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকে উসকানিমূলক আখ্যা দিয়ে জানিয়েছে যে, এটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব লঙ্ঘন করেছে। নর্থ কোরিয়ার যেকোনো ব্যালিস্টিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ বলেও জানায় তারা।

‘শক্তিশালী সয়েল্ড ফুয়েল ক্ষেপণাস্ত্র হোয়াসং-এইটিন নর্থ কোরিয়ার সবচেয়ে নতুন ও অত্যাধুনিক আইসিবিএম। সোমবারের উৎক্ষেপণটি চলতি বছরে তৃতীয় হোয়াসং-এইটিন ক্ষেপণাস্ত্র।’

নর্থ কোরিয়ার নেতা কিম জং উন বলেছেন, ‘আমেরিকা যদি ভুল সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে নর্থ কোরিয়া কীভাবে জবাব দিতে পারে, তা এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে’।

শুধু চলতি বছরই নর্থ কোরিয়া প্রায় ১০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। নর্থ কোরিয়ারের পারমাণবিক অস্ত্রাগারের আধুনিকীকরণ এবং অ্যামেরিকান ছাড় অর্জণের চেষ্টা বলে অভিহিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

‘নর্থ কোরিয়ারের ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জবাবে আমেরিকা ও সাউথ কোরিয়া তাদের সামরিক মহড়া সম্প্রসারণ করেছে। জাপানের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করে বোমারু ও পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিনগুলো মোতায়েনের মাধ্যমেন সাউথ কোরিয়াকে আরও শক্তিশালী করা।’

‘ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের কঠোর পরীক্ষা সত্ত্বেও, নর্থ কোরিয়া নতুন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এড়াতে পেরেছে কারণ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য চায়না এবং রাশিয়া নর্থ কোরিয়ার পরীক্ষামূলক ক্রিয়াকলাপের বিষয়ে কাউন্সিলে বাধাগ্রস্ত করেছে।

নর্থ কোরিয়ার আইসিবিএম ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ নিয়ে মঙ্গলবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে অ্যামেরিকা, নর্থ কোরিয়া ও অন্যান্য কূটনীতিকদের সঙ্গে নর্থ কোরিয়া ও রাশিয়ার কূটনীতিকদের মধ্যে মতবিরোধ হয়।’