কথার রাজনীতি নয়, কাজের রাজনীতি চাই: তারেক রহমান
একাত্তর স্বাধীনতা অর্জনের, চব্বিশ স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ: আলোচনা সভায় তারেক রহমান!
বদিউল আলম লিংকন: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “একাত্তর ছিল স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ, আর চব্বিশ স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ইতিহাসের নৃশংসতম এক ফ্যাসিস্টের পদত্যাগ ও পলায়নের পর আজ যখন গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো নিজেদের মধ্যেই নতুন নতুন ইস্যুতে বিতর্কে লিপ্ত হচ্ছে, তখন তা শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি অবমাননার শামিল।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
গণতান্ত্রিক ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গড়ার আহ্বান
তারেক রহমান বলেন, “গণতান্ত্রিক ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করা সম্ভব। এখন সময় এসেছে কাজের রাজনীতিতে মনোযোগী হওয়ার।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হলে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে পতিত, পরাজিত, পলাতক ফ্যাসিস্ট চক্রের পুনর্বাসনের সুযোগ তৈরি হবে। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাজপথের সহযোদ্ধা কোনো কোনো দলের বা তাদের সদস্যদের বক্তব্য গণতন্ত্রকামী জনগণের মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
‘কথার রাজনীতি’ নয়, ‘কাজের রাজনীতি’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “প্রচলিত প্রতিশোধ-প্রতিহিংসা কিংবা কথার রাজনীতির পরিবর্তে আমাদেরকে বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন ঘটাতে হবে। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে একটি নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে চাইলে অবশ্যই প্রচলিত ধারার বাইরে এসে কাজ করতে হবে।”
তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, কথার রাজনীতি বাদ দিয়ে কাজের রাজনীতির মাধ্যমেই বিএনপি ভবিষ্যৎ রাজনীতি পরিচালনা করবে।
বিএনপির আগামী দিনের রাজনীতি
তারেক রহমান বিএনপির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে বলেন—
বিএনপির আগামী দিনের রাজনীতি হবে জনগণের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতি।
দেশের ভেতরে বা বিদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই হবে মূল লক্ষ্য।
নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করাও হবে বিএনপির আরেকটি প্রধান লক্ষ্য।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক উত্থান-পতনের নানা অধ্যায় অতিক্রান্ত হয়েছে। বিশেষত ২০২৪ সালের শেষ ভাগে তীব্র আন্দোলন, শহীদের আত্মত্যাগ এবং গণ-আন্দোলনের চাপের মুখে ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটে। তারেক রহমান সেই প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে বলেন, স্বাধীনতা রক্ষার জন্য জনগণের ঐক্য এবং কার্যকর রাজনীতি অপরিহার্য।
তারেক রহমানের বক্তব্যে মূল বার্তা ছিল— শহীদদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতে হলে গণতন্ত্রকামী শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, বিভাজন নয় বরং বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা ও কর্মভিত্তিক রাজনীতি দিয়েই জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে।