রাবিতে যৌন হয়রানির ঘটনায় শিক্ষার্থীদের ১১ দফা দাবি, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পরিসংখ্যান বিভাগের এক শিক্ষক কর্তৃক এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় শিক্ষার্থীরা সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে মানববন্ধন আয়োজন করে। তারা নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার জন্য ১১ দফা দাবি উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব বরাবর স্মারকলিপি হিসেবে প্রদান করেন।

শিক্ষার্থীদের ১১ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে:

ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা ও শারীরিক-মানসিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

মামলার কার্যক্রম গোপনীয়ভাবে পরিচালনা ও সংরক্ষণ করা।

প্রাতিষ্ঠানিক বা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অভিযুক্ত দায় এড়িয়ে যেতে না পারে তা নিশ্চিত করা।

অভিযুক্ত শিক্ষককে বিভাগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও প্রচলিত আইনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান।

শিক্ষকের অতীত আচরণ যাচাই করে দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তি নিশ্চিত করা।

প্রতিটি বিভাগে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলের কার্যকারিতা বৃদ্ধি।

শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর অতীত রেকর্ড যাচাই, মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়ন ও লিখিত অঙ্গীকারনামা বাধ্যতামূলক করা।

ভুক্তভোগীর চিকিৎসা ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবার খরচ প্রশাসন বহন করবে।

শিক্ষার্থীদের চেম্বারে ডাকা বন্ধ বা দরজা খোলা রাখার নীতি নিশ্চিত করা।

শিক্ষকদের চেম্বার সিসিটিভির আওতায় আনা।

প্রতিটি বিভাগে স্বাধীন মনিটরিং সেল গঠন।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী নাফিসা নেহা বলেন, “শিক্ষক আমাদের পিতৃতুল্য। কিন্তু কেউ যদি শিক্ষার্থীকে হয়রানি করে, আমরা কোথায় নিরাপদ?” তিনি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন আচরণ করার সাহস না পায়।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও স্টুডেন্টস রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফাহির আমিন বলেন, “শিক্ষকদের দ্বারাই নারী শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। আমরা চাই সুষ্ঠু বিচার হোক। তা না হলে রাজপথে নেমে প্রতিবাদ চালিয়ে যাব।”

উপ-উপাচার্য ফরিদ খান বলেন, “অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন জমা হলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

এর আগে ১৩ আগস্ট ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ৪ আগস্ট মাস্টার্স শিক্ষার্থী ক্লাসের উপস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়ে অধ্যাপক প্রভাস কুমার কর্মকারের চেম্বারে গেলে তিনি অশোভন স্পর্শ ও কুরুচিপূর্ণ প্রস্তাব দেন।

মানববন্ধনে বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।